সরকারি শিশু পরিবারে উন্নয়নের নামে লুটপাট
সমাজসেবা অধিদফতরের আওতাধীন ফরিদপুর সরকারি শিশু পরিবারের অবকাঠামো উন্নয়নের নামে লাখ লাখ টাকা লুটপাট ও পরিবেশের ক্ষতির অভিযোগ উঠেছে।
স্কুল ঘর ভেঙে টেন্ডার ছাড়া অবৈধভাবে মালামাল বিক্রয়, পুকুরের মাটি ও পুরাতন ভবনের ইট বিক্রি, চত্বরের গাছ কেটে বিক্রি, পাঁচটি পুরাতন সেমি পাকা ভবন বিক্রি এবং কল্যাণ তহবিল নয়-ছয়সহ বিভিন্ন বিল ভাউচারে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগের কাঠগড়ায় প্রতিষ্ঠানটির তত্ত্বাবধায়ক সহকারী পরিচালক নুরুল হুদা চক্র। তিনি আবাসন প্রতিষ্ঠানের পরোক্ষ মালিকও।
তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযানও চালিয়েছে। অভিযানে বেশকিছু অভিযোগের সত্যতা পায় দুদক টিম।
রোববার (৩ অক্টোবর) দুদকের সজেকা-ফরিদপুরের কোর্ট পরিদর্শক মো. বজলুর রহমানের নেতৃত্বে একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফরিদপুর সমাজসেবা অধিদফতরের আওতাধীন সরকারি শিশু পরিবারের তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম। দুদক টিম সরেজমিনে পরিদর্শন করে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নেয়।
তিনি আরও বলেন, অভিযানকালে টিমের কাছে শিশু পরিবার কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে সব উন্নয়নকাজ যথাযথ নিয়ম মেনে হয়েছে। দুদক টিম অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট সব বিল ভাউচার, টেন্ডার ডকুমেন্টসহ প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ চেয়েছে। যা যাচাই-বাছাই করে কমিশনের কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সহকারী পরিচালক মো. নুরুল হুদা ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি শিশু পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি বেসরকারি খাতের আবাসন প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষও। অভিযোগ অবকাঠামো ও ভূ-প্রকৃতি পরিবর্তনের নামে বিভিন্ন কৌশলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
তার দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- সরকারি শিশু পরিবারের পাঁচটি সেমি পাকা স্কুল ঘর ভেঙে টিন, কাঠ, ইট ও জানালাসহ অন্যান্য জিনিসপত্র টেন্ডার প্রক্রিয়া ছাড়াই সরাসরি বিক্রি করে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া এবং পুরাতন টয়লেট ও ছোট ছোট স্থাপনা থেকে প্রায় ১০ হাজার ইট লোপাট।
এছাড়া সরকারি শিশু পরিবারে ভেতরে পুকুর বড় করাসহ সৌন্দর্য বর্ধিত করার নামে ৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই পরিবার চত্বরের পুরাতন শিমুল, শিশু, আম, সেগুন ও কৃষ্ণচূড়াসহ ৫০টি গাছ কেটে ২০ লাখ টাকা ও পুরোনো পাঁচটি সেমি পাকা ভবন বিক্রি করে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা) কল্যাণ তহবিলের টাকা নয়ছয় এবং ভুয়া বিল ভাউচার তৈরির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে মো. নুরুল হুদার বিরুদ্ধে।
আরএম/এসএসএইচ