রাজধানীর উত্তরার জহুরা মার্কেটের মাছের বাজারে প্রবেশ করতেই কানে আসে ইলিশ বিক্রেতাদের ডাক। দোকানের সামনে আলাদা ঝুড়িতে সাজিয়ে রাখতে দেখা যায় মাছের রাজা ইলিশকে। ক্রেতারা ইলিশের ঝুড়ির কাছে গিয়ে পছন্দের মাছটি কেনেন। 

এমন চিরচেনা চিত্রের দেখা আজ (সোমবার) পাওয়া গেল না। মাছের এ বাজারে সব মাছের দেখা মিললেও ইলিশের খোঁজ মিললো না। মাছ বিক্রেতারা বলছেন, সরকার থেকে ইলিশ বিক্রি নিষেধ করা হয়েছে। ফলে তারাও আর ইলিশ বিক্রি করছেন না।

সরেজমিনে দেখা যায়, যেসব দোকানে একদিন আগেও যে ঝুড়িতে ইলিশ দেখা যেত, সেই ঝুড়ি রুই, কাতলাসহ অন্যান্য মাছে ভরপুর রয়েছে। দুই একটা ঝুড়ি এখনো নীল পেপার দিয়ে মোড়ানো রয়েছে।

প্রায় ১২ বছর ধরে ইলিশ বিক্রি করছেন রামু। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইলিশ বিক্রি বন্ধে মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে বাজারে গতকাল বিভিন্ন পোস্টার লাগিয়ে গেছে। তাছাড়া পাইকারি বাজারেও ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। যা ছিল দোকানে গতকাল সব বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, অনেক ক্রেতাই বিষয়টা জানেন না। অনেকেই এসে ইলিশের খোঁজ নিচ্ছেন। সেই সময়ে ক্রেতাদের বুঝিয়ে বলতে হচ্ছে, ইলিশ ধরা ও বিক্রি বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশ থেকে আরেক মাছ বিক্রেতা বলে উঠলেন, ছয় হাজার টাকা কেজি দিলেও ইলিশ দেয়া যাবে না। ইলিশ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি।

সরেজমিনে এ প্রতিবেদক শুরুতে ক্রেতা সেজে ইলিশের খোঁজ করলেও মাছ বিক্রেতাদের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সবাই এখন অন্য মাছ বিক্রিতে সময় পার করছেন। এক মাছ বিক্রেতা জানান, তারা আগে থেকেই জানতো বিষয়টি। তাই শেষদিনে যেন সব ইলিশ বিক্রি হয় সে প্রস্তুতিও ছিল তাদের।

মৎস্য অধিদফতর জানায়, সোমবার (৪ অক্টোবর) থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। গত ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন-সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রে সব ধরনের মৎস্য আহরণও এ সময় নিষিদ্ধ থাকবে।

একে/এইচকে