আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) গবেষণা, গবেষণার মানসহ সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান। এসময় তিনি আইসিডিডিআর,বির জীবন রক্ষাকারী গবেষণাকে ‘অনুপ্রেরণামূলক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রথমবারের মতো ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত আইসিডিডিআর,বি পরিদর্শন করেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত। এসময় রাষ্ট্রদূত এবং তুরস্ক দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি গিজেম আইডিন আরডেমকে আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ স্বাগত জানান।

পরে ড. আহমেদ তাদের উদ্দেশ্যে আইসিডিডিআর,বি সম্পর্কিত একটি সামগ্রিক চিত্র উপস্থাপন করেন এবং কীভাবে এই প্রতিষ্ঠান বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে এবং দক্ষিণ বিশ্বে একটি সেন্টার অব এক্সিলেন্সে পরিণত হয়েছে সে সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি আইসিডিডিআর,বি কীভাবে সাধারণ ও বাস্তবায়নমুখী গবেষণাকে কাজে লাগিয়ে এবং এর জ্ঞানকে জনস্বাস্থ্য কার্যক্রমে পরিণত করে বিশ্বের নিন্ম ও মাঝারি আয়ের দেশগুলো যেসব জটিল সমস্যার সম্মুখীন হয়ে তা সমাধান করে থাকে তা ব্যাখ্যা করেন।

রাষ্ট্রদূত আইসিডিডিআর,বির মিউকোজাল ইমিউনোলজি অ্যান্ড ভ্যাক্সিনোলজি ল্যাবরেটরি ঘুরে দেখেন। আইসিডিডিআর,বি-র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. ফেরদৌসী কাদরী ল্যাবের অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রদর্শন করেন, যা কোভিড-১৯ সংক্রান্ত গবেষণাসহ টিকা গবেষণায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

রাষ্ট্রদূত কেবল আইসিডিডিআর,বি-র গবেষণা কর্মকাণ্ডের বিশাল পরিধি দেখেই মুগ্ধ হননি, বরং তিনি বাংলাদেশ ও বহির্বিশ্বের বিপন্ন মানুষের সেবায় কত সহজে গবেষণাকে কাজে লাগিয়ে স্বল্প খরচের সমাধানে আইসিডিডিআর,বি ভূমিকা রাখে তা দেখেও অভিভূত হন। তিনি আরও গবেষণা, অর্থায়ন ও সহযোগিতামূলক কাজের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। নিজের মন্তব্যে তিনি ড. তাহমিদ আহমেদ এবং আইসিডিডিআর,বি-র বিজ্ঞানী ও গবেষকদেরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আজ আমরা এই সুপ্রতিষ্ঠিত ও প্রশংসনীয় প্রতিষ্ঠানের কাজ সম্পর্কে সরাসরি তথ্য জানতে পারলাম, যে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করে চলেছে। আপনারা যা করেন তা সত্যিই অনুপ্রেরণামূলক।’

কোভিড-১৯ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তুরস্ক বর্তমানে টার্কোভ্যাক নামে কোভিড-১৯ এর একটি টিকা তৈরিতে কাজ করছে। এই কাজ সম্পন্ন হলে আমরা এটিকে অন্যান্য দেশের জন্য সহজপ্রাপ্য করতে চাই এবং কীভাবে এবিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক স্থাপন করা যায় তার উপায় অনুসন্ধান করছি।’

ড. আহমেদ প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে রাষ্ট্রদূতের আগ্রহের প্রশংসা করেন। তিনি রাষ্ট্রদূতকে জনস্বাস্থ্য গবেষণায় নিয়োজিত তুরস্কের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা গড়ে তুলতে আইসিডিডিআর,বি-কে সহায়তা করার অনুরোধ জানান।

আইসিডিডিআর,বি-র সিনিয়র লিডারশিপ টিমের সদস্যরাও এসময়ে উপস্থিত ছিলেন।

টিআই/জেডএস