পূর্বাচল প্রকল্পে একটি কূটনৈতিক জোন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) দেওয়া তথ্য উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বারিধারা কূটনৈতিক এলাকায় সব দূতাবাস/হাইকমিশন অফিস স্থানান্তরের জন্য কয়েকটি দূতাবাস/হাইকমিশনের জমির চাহিদা রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১০টি বিদেশি দূতাবাসের প্লটের আবেদন প্রক্রিয়াধীন। বিশেষত ব্রাজিল, শ্রীলঙ্কা, ওমান, কুয়েত, মিয়ানমার ও আফগানিস্তান তাদের দূতাবাস স্থাপনের সূচনালগ্ন থেকেই এ বিষয়ে অনুরোধ জানিয়ে আসছে। এছাড়া ঢাকায় অবস্থিত ৫০টি কূটনৈতিক মিশনের মধ্যে যারা বরাদ্দপ্রাপ্ত অথবা নিজস্ব জমি ব্যবহার করছে না, তারাও আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে মর্মে এরইমধ্যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন মিশনের স্থায়ী অফিস নির্মাণে জমির অপ্রতুলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউকসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় চলছে। রাজউক থেকে পাওয়া তথ্যমতে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে এরইমধ্যে একটি ডিপ্লোম্যাটিক জোন করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, রাজধানীতে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান, যার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা শহর চারিদিকে দ্রুতগতিতে প্রসারমান। এদিকে দূতাবাস স্থাপনের জন্য নতুন নতুন চাহিদার বিপরীতে ঢাকার গুলশান ও বারিধারা কূটনৈতিক জোনে পর্যাপ্ত জমির সংকুলান করা কঠিন। এ অবস্থায় পূর্বাচলে দূতাবাস স্থাপনের জন্য নির্ধারিত কূটনৈতিক জোন গড়ে তোলা প্রয়োজন হতে পারে।

নওগাঁ-২ আসনের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, হাঙ্গেরি সরকার বাংলাদেশে একটি কনস্যুলার অফিস স্থাপনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সম্মতি চেয়েছে। 

মন্ত্রী জানান, হাঙ্গেরির আবেদনটি প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া বাংলাদেশে দক্ষিণ আফ্রিকার দূতাবাস স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা চলছে।

ঢাকা-১১ আসনের এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশিদের অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা মোকাবিলায় আইনি সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে বিদ্যমান বাংলাদেশ মিশনগুলোতে কোনো আইন সহায়তা কেন্দ্র/ডেস্ক নেই। তবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ মিশনগুলো সব ধরনের আইনি সহায়তা দিয়ে থাকে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আইনি সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ করা বাজেটে আলাদা একটা বাজেট কোড রয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ওই বাজেট কোডের বিপরীতে আট কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 

মন্ত্রী বলেন, প্রবাসে জেলে আটকে পড়া কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যায় পড়া বাংলাদেশিদের সহায়তা করার জন্য দূতাবাস থেকে পাওয়া চাহিদা অনুযায়ী মন্ত্রণালয় অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে।
   
নোয়াখালী-৩ আসনের মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ৮২ হাজার ৬৫৪ জন বন্দি আটক আছে। এর মধ্যে পুরুষ ৭৯ হাজার ৪৫৪ জন ও মহিলা তিন হাজার ২০০ জন।

চট্টগ্রাম-৪ আসনের দীদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজধানী ঢাকা এবং বাণিজ্যিক রাজধানীর চট্টগ্রামের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জনসংখ্যা অনুপাতে পুলিশ সদস্য সংখ্যা যথেষ্ট নয়। রাজধানী ঢাকা এবং বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে জনবল বৃদ্ধির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা/ইউনিট থেকে প্রস্তাব পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

বর্তমান সরকারের বিগত দুই মেয়াদে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে বিভিন্ন পদবীর মোট নয় হাজার ৪৫৬টি এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে বিভিন্ন পদবীর দুই হাজার ১৩১টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।

 

এইউএ/জেডএস