সংবিধানে নির্দেশনা থাকলেও ৫০ বছরে ইসি গঠনে কোনো আইন হয়নি
সংবিধানে নির্দেশনা থাকলেও নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ৫০ বছরে কোনো সরকারই আইন প্রণয়ন করেনি। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমনটা জানিয়েছেন দেশের ৫৩ বিশিষ্ট নাগরিক।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন গঠনে সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন প্রণয়ন চান বিশিষ্ট নাগরিকরা। অস্থায়ী ভিত্তিতে সৃষ্ট ‘অনুসন্ধান কমিটি’র সুপারিশে গঠিত রকিবউদ্দিন কমিশন ও নূরুল হুদা কমিশন তাদের চরম পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। যার ফলে জনগণের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের ওপর ব্যাপক অনাস্থা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে তীব্র শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আগামী ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে। নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠনের উদ্যোগ এখনই শুরু করতে হবে। যার প্রাথমিক পদক্ষেপ হবে সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন করা। যাতে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে ও সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত থেকে নির্বাচন পরিচালনার আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারে। নির্বাচনকালীন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাতে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে সে বিষয়ে সংস্কারের পদক্ষেপ এখন থেকেই ভাবতে হবে।
৫৩ নাগরিক বলেছেন, আইনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য কমিশনারদের যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের বিধান রাখতে হবে। কমিটি দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে হবে। যাতে সব নির্বাচনী অংশীজনের কাছে তা গ্রহণযোগ্যতা পায়। কমিটির দায়িত্ব হবে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে আইনে নির্ধারিত যোগ্যতা অনুযায়ী কয়েকজন সৎ, নির্দলীয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের একটি প্যানেল নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করা। স্বচ্ছতার অংশ হিসেবে প্যানেলে থাকা ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হবে। তাদের বিষয়ে গণশুনানি করা হবে। কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে তাদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করা হয়েছে, তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান, ড. আকবর আলি খান ও রাশেদা কে চৌধুরী, বিচারপতি আবদুল মতিন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, মানবাধিকারকর্মী ড. হামিদা হোসেন, সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার. সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান ও মহিউদ্দিন আহমদ, অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, অধ্যাপক পারভীন হাসান, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, অর্থনীতিবিদ ড. আহসান মনসুর, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না, ড. শাহ্দীন মালিক ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন, মুনিরা খান, শিরিন হক, সালমা আলী, শাহীন আনাম, ফারাহ কবির, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, সাবেক সচিব আবদুল লতিফ মণ্ডল, সঞ্জীব দ্রং, আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম, শারমিন মুরশিদ, শামসুল হুদা, অধ্যাপক সি আর আবরার, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, অধ্যাপক আকমল হোসেন, অধ্যাপক স্বপন আদনান, অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, গোলাম মোনোয়ার কামাল, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ূয়া, অধ্যাপক নায়লা জামান খান, জাকির হোসেন, ফারুক ফয়সাল, ড. আবদুল আলিম ও নূর খান লিটন।
এসআর/এসএম