তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, শুধু গত এক মাসেই ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি স্টার্টআপে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। অর্থাৎ, ৮০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ এসেছে এক মাসে। গতকালও প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে বলেছেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক নম্বরে আইসিটি। কারণ প্রধানমন্ত্রী তার দূরদর্শিতার মাধ্যমে জানেন আগামী দিনের জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা, সেখানে কিন্তু আইসিটি মূল চালিকা শক্তি।

বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কারওয়ান বাজারের ভিশন ২০২১ টাওয়ার ১ (জনতা টাওয়ার) এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ভিশন ২০২১ টাওয়ার ২ সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনের লক্ষ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অনুকূলে বরাদ্দকৃত জমি হস্তান্তর উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ইদানিং ই-কমার্স নিয়ে ব্যাপক অলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু আমি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের স্টার্টআপদের এবং যারা বিজনেস এন্টারপ্রেনর আছেন ই-কমার্সের কিন্তু প্রসার হবেই। সব বিজনেসই আস্তে আস্তে ডিজিটাল হতে বাধ্য। কিন্তু এখানে আমাদের নিয়ম, আইন এবং শৃঙ্খলা আনার জন্য অবশ্যই যারা রেগুলেটর আছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি, টেলিকম- আমরা সবাই মিলে একটা ক্রমবর্ধমান ইন্ডাস্ট্রি গড়তে চাই, এটা যেন কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। সেই সঙ্গে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

আমাদের বিশাল এক সম্ভাবনার এ খাত আইসিটি এবং স্টার্টআপ, এটাকে আরও সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রাইভেট সেক্টরকে উৎসাহিত করার জন্য, অনুপ্রাণিত করার জন্য ‘ডিজিটাল এন্টারপেনারশিপ অ্যান্ড ইকো সিস্টেম’ এই প্রজেক্টটা আমরা হাতে নিয়েছি, উল্লেখ করেন পলক।

তিনি আরও বলেন, আইটি সেক্টরে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সফটওয়ার টেকনোলজি পার্কে স্পেসের ব্যাপক চাহিদা এবং ব্র‍্যান্ডিংয়ের উপযুক্ত ইকো সিস্টেম গড়ে তোলার জন্য কারওয়ান বাজারে আরও একটি সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন হবে। ১ লাখ ২০ হাজার বর্গফুট জায়গায় ১২তলা এ গ্রিন বিল্ডিং তৈরিতে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালের ৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের প্রথম সভায় কারওয়ান বাজারে ভিশন ২০২১ টাওয়ারটিতে একটি সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক প্রতিষ্ঠার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সেই বছরের ২৪ নভেম্বর ভিশন ২০২১ টাওয়ারটি বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অনুকূলে বরাদ্দ দেয়। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ জরাজীর্ণ ভবনটি সংস্কার করে একটি সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করে। ২০১৫ সালের ১৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সফটওয়ার টেকনোলজি পার্কটির কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। বর্তমানে পার্কটিতে ১৯টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় এক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এছাড়া এখানে ১৫টি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক এ এন এম সফিকুল ইসলাম, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রীনা পারভিন, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক সৈয়দ জহরুল ইসলাম প্রমুখ।

এএসএস/এসএসএইচ