মেট্রোরেলের মালামাল চুরি : তদন্তে যুবকের মৃত্যুরহস্য উদঘাটন
রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে মেট্রোরেল প্রকল্পের মালামাল চুরির ঘটনায় সংঘবদ্ধ চোরচক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার ও চুরির ঘটনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. আশিক (১৯), মো. হারুন (৪০)। একই সঙ্গে চোরাই মালামালসহ একটি পিকআপ ও সিএনজি জব্দ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর নাজমুল (১৮) নামে এক যুবক তার মিরপুরের বাসা থেকে কাজের সন্ধানে যাওয়ার পর নিখোঁজ হয়। এমন তথ্য জানিয়ে পল্লবী থানায় সাধারণ ডায়েরি করে পরিবার।
১৭ সেপ্টেম্বর জানা যায়, ডিএমপির তুরাগ থানায় একটি অশনাক্ত মরদেহ পাওয়া গেছে, যা প্রায় এক সপ্তাহ পর নিখোঁজের বাবার মাধ্যমে শনাক্ত হয়। এ ঘটনায় তুরাগ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। মূলত এ ঘটনায় র্যাবের একটি দল ছায়াতদন্ত শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ১০টার দিকে র্যাব-৪ এর একটি দল রাজধানীর পল্লবী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চোরাই পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন মালামাল, একটি পিকআপ ও একটি সিএনজিসহ ওই দুই জনকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নিহত নাজমুল চক্রের অপর সদস্য আশিক, রাসেল ও শামীমের সঙ্গে কাজ করত। গত ৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও শামীম নিহত নাজমুলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ওই রাতে তারা বরাবরের মতো চুরির কাজে যোগ দেয়।
র্যাবের ছায়া তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চক্রটি বেশকিছু দিন ধরে মেট্রোরেলের মালামালসহ অন্য সরকারি কাজের মালামাল এবং বৈদ্যুতিক তার চুরি করে আসছিল। র্যাবের অভিযানে গ্রেফতার আশিক জিজ্ঞাসাবাদে নাজমুলের মৃত্যুর ঘটনা চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয়।
আশিক জানায়, রাসেল, শামীম ও আশিকের উপস্থিতিতে নাজমুল বৈদ্যুতিক তার কাটতে গিয়ে উত্তরায় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করে। এ নিয়ে তুরাগ থানায় অপমৃত্যু মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।
পল্লবী থানা এলাকায় পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প ছাড়াও আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের মালামাল- লোহা, ইস্পাত, তার, মেশিন কৌশলে চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে র্যাবের কাছে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে গ্রেফতার আশিক ও হারুন।
অপরাধের কৌশল
গত কয়েক বছর ধরে ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প পরিচালিত হয়ে আসছে। এসব প্রকল্পের কার্যক্রম চলাকালে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপকরণ স্তুপ আকারে থাকা অবস্থায় সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি দল সুকৌশলে চুরি করে পছন্দ মতো গোপন একটি জায়গায় নিয়ে সেগুলোকে সহজে বহনযোগ্য করে বিভিন্ন ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে আসছিল।
জেইউ/এসএসএইচ