চার নদীর অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় বাড়ল ৩৩৩ কোটি টাকা
বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদ-নদীর আনুষঙ্গিক অবকাঠামো উন্নয়নের প্রথম সংশোধনে ব্যয় বাড়ল ৩৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটির ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি বাস্তবায়নের মেয়াদও বেড়েছে এক বছর। মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৮৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে হয়েছে এক হাজার ১৮১ কোটি ১০ লাখ টাকা।
প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ছিল ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। সংশোধনীতে তা বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
‘বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীর রক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্পটি গত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রথম সংশোধন করে অনুমোদন দেওয়া হয়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
প্রকল্পের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমির অবৈধ দখল রোধ এবং দখলমুক্ত অংশের সৌন্দর্য বর্ধন, নদীর উভয় তীরের পরিবেশগত উন্নয়ন, নদীর দখলমুক্ত তীরভূমিতে অবকাঠামো নির্মাণ, নদীর নাব্যতা, গভীরতা ও প্রশস্ততা বৃদ্ধি এবং নদীর পানির দূষণ কমানো সম্ভব হবে। ঢাকা সদরঘাট, উত্তরখান, তুরাগ, মোহাম্মদপুর, কামরাঙ্গীরচর, কোতোয়ালি, মিরপুর, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ সদর বন্দর, সোনারগাঁও ও গাজীপুর সদরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
ওয়াকওয়ে সংলগ্ন ৩৫.৩৫৮ কিলোমিটার ড্রেন, ২.৬৫ কিলোমিটার বোল্ডার প্রটেকশন, জেটির জন্য ২১ কিলোমিটার পার্কিং ইয়ার্ড এবং চারটি ঘাট নির্মাণ কার্যক্রম ডিপিপিতে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্তি, রেট সিডিউল পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধিসহ কতিপয় অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় হ্রাস/বৃদ্ধি এবং প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধির ফলে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রয়োজন পড়েছে
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ১৮.২১ লাখ ঘনমিটার মাটি খনন ও অপসারণ, নদীর তীরভূমিতে ৩৩.৮৫ কিলোমিটার, নদীর তীরভূমিতে কলামের ওপর ১৭.৭৫ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে এবং ওয়াকওয়ে সংলগ্ন ৩৫.৩৫ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ৮০টি আরসিসি সিঁড়ি নির্মাণ, ১০.০৪ কিলোমিটার কি-ওয়াল নির্মাণ, ২৯১টি বসার বেঞ্চ নির্মাণ, ৮৫০মিটার সীমানা প্রাচীর ও ৩৮৫০টি সীমানা পিলার নির্মাণ, চারটি ঘাট, ১৪টি জেটি ও ২৮টি স্পাড নির্মাণ, ২.৬৫ কিলোমিটার বোল্ডার প্রটেকশন, ২১ হাজার বর্গমিটার পার্কিং ইয়ার্ড নির্মাণ, ৩.৫ কিলোমিটার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, তিনটি ইকোপার্ক নির্মাণ (৯০৪২ বর্গমিটার) এবং একটি ডাবল কেবিন পিক-আপ ক্রয় ইত্যাদিসহ আনুষঙ্গিক কাজ হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্টরা প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসেবে বলেন, ওয়াকওয়ে সংলগ্ন ৩৫.৩৫৮ কিলোমিটার ড্রেন, ২.৬৫ কিলোমিটার বোল্ডার প্রটেকশন, জেটির জন্য ২১ কিলোমিটার পার্কিং ইয়ার্ড এবং চারটি ঘাট নির্মাণ কার্যক্রম ডিপিপিতে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্তি, রেট সিডিউল পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধিসহ কতিপয় অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় হ্রাস/বৃদ্ধি এবং প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধির ফলে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রয়োজন পড়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশিদ বলেন, রাজধানী ঢাকার চারপাশে চারটি নদী বহমান। নদীগুলো রক্ষা করতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মাধ্যমে রাজধানীর চারপাশে থাকা বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে অবৈধ দখল রোধ, পরিবেশগত উন্নয়ন সাধন, সৌন্দর্য বর্ধন ও জনসাধারণের চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ লক্ষ্যে প্রকল্পটি সংশোধন করে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এসআর/এমএআর/