দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার উদ্ধার সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি কেনা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা সুপার মার্কেটে ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২১’ উপলক্ষে ‘ভূমিকম্প এবং অগ্নিকাণ্ডে করণীয়’ বিষয়ক সচেতনতামূলক মহড়ায় তিনি এ তথ্য জানান। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত মহড়ায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রতিমন্ত্রী। 

তিনি বলেন, যেকোনো দুর্যোগে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে উন্নত দেশের মতো সক্ষমতা অর্জনে সরকার কাজ করছে। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ত্রাণনির্ভর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আগাম সতর্কবার্তা প্রচার ব্যবস্থা শুরু করেন। 

উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবন ও সম্পদ বাঁচাতে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা প্রচারে সিপিপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলেও জানান তিনি। 

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে সিপিপির যাত্রা শুরু করেছিলেন। যারা আগাম সতর্কবার্তা প্রচার, সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষের জানমাল রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা রেখে আসছে। সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক সংখ্যা বর্তমানে ৭৬ হাজার ২০ জন।

সচেতনতা এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পূর্বপ্রস্তুতি থাকলে যেকোনো দুর্যোগে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব বলেও মনে করেন সরকারের এ প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সে কাজটাই করে যাচ্ছে। ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফণী ও বুলবুল এবং ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এসব ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সরকারের পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। 

এবছর ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যমোচনসহ সামাজিক নিরাপত্তা অর্জনে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো প্রশংসিত হয়েছে সারাবিশ্বে। তাই দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে এখন বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

বিভাগীয় এবং জেলা শহরের জন্য ৬৫ ও ৫৫ মিটার উচ্চতায় উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর লক্ষ্যে ১৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১টি উন্নতমানের লেডার কেনা হবে বলেও এসময় জানান তিনি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ্ মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আগা খান এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আবুল কাশেম মোল্লা।

এসএইচআর/জেডএস