জাতিসংঘ অধিবেশনে যে বিষয়গুলো তুলে ধরবে বাংলাদেশ
জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ২ সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় সফরে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনাকালে দীর্ঘ ১৯ মাস পর এটি হবে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমসহ মোট ৮০ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হচ্ছেন। সফরে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রধানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ইস্যু, করোনার টিকাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জোর দেবে বাংলাদেশ।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের বিতর্ক পর্ব শুরু হবে। অধিবেশনে যোগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছাবে।
এবারের অধিবেশনের একটি বড় অংশ জুড়ে থাকবে করোনা ও পরবর্তী টেকসই পুনরুদ্ধার ও পুনর্নির্মাণ। বিশ্বব্যাপী টিকা সমস্যা দূরীকরণের বিষয়টি এবারের অধিবেশনে বিশেষভাবে আলোচিত হবে। কপ-২৬ থেকে বিশ্ব যাতে একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা পেতে পারে সে বিষয়েও এবারের অধিবেশনে বিশ্ব নেতারা আলোচনা করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
মোমেন জানান, ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাধারণ বিতর্ক পর্বে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য রাখবেন। প্রতিবারের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী বাংলায় বক্তৃতা দেবেন। তিনি দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন অগ্রযাত্রা, স্বাস্থ্যখাতে সাফল্য সম্পর্কে আলোকপাত করবেন। পাশাপাশি, বিশ্বশান্তি, নিরাপদ অভিবাসন, করোনাভাইরাসের টিকার ন্যায্যতাভিত্তিক বণ্টন, বৃহৎ পরিসরে করোনার টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যে পেটেন্টসহ মেধাস্বত্ব উন্মুক্তকরণ, ফিলিস্তিনি ও বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক সংকট, জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত বিষয়গুলো তার বক্তব্যে উঠে আসবে।
ড. মোমেন বলেন, এবারের সাধারণ অধিবেশনে ‘জাতিসংঘ ফুড সিস্টেম সামিট’ শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভার মূল লক্ষ্য হলো টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের অন্তর্ভুক্ত ক্ষুধা, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য এবং বৈষম্যের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোর সঙ্গে বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার আন্তঃসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে, উক্ত উন্নয়ন অভীষ্টগুলোর অর্জন ত্বরান্বিত করা।
জাতিসংঘের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বেশ কয়েকটি বৈঠক হবে বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, মালদ্বীপ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের কথা আছে। এছাড়া বারবাডোজের প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গেও বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার ঢাকা থেকে রওনা হয়ে ১৭-১৮ সেপ্টেম্বর ফিনল্যান্ডে অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক পৌঁছাবেন তিনি। ১৯-২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী। ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন তিনি। নিউইয়র্ক সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন ডিসিতে যাবেন, সেখানে ২৫-৩০ সেপ্টেম্বর অবস্থান করবেন। ৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন থেকে যাত্রা করে ১ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
এনআই/এমএইচএস/জেএস