সেনাবাহিনীতে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর সূত্রাপুর ও গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ এর একটি দল তাদের গ্রেফতার করে।

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-৩ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস জানান, প্রতারক চক্রের সদস্য মো. নাজির হোসেন এবং মো. কামরুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীতে মেস ওয়েটার ও সৈনিক পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ জনগণকে বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়ার মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে।

এমন তথ্যের সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে র‌্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর সূত্রাপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে প্রতারক চক্রের সদস্য নাজির হোসেনকে (৩২) গ্রেফতার করে। তার বাড়ি ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানাধীন বেগুনবাড়ীতে।

অন্যদিকে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চক্রের প্রধান মো. কামরুজ্জামানকে (৩৩) গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা পরস্পর বন্ধু। নাজির একটি হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়। সে সুকৌশলে চাকরিপ্রত্যাশীদের টার্গেট করে চাকরি দেওয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিশ্বস্ততা অর্জনের পর সে কামরুজ্জামানকে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। 

কামরুজ্জামান ভিকটিমকে আশ্বস্ত করে যে, এর আগে সে বহু লোককে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি দিয়েছে। তবে চাকরি পেতে হলে সেনাবাহিনীর নিয়োগ বোর্ডে যারা থাকে তাদেরকে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে।

এভাবে প্রথমে সে একটি চুক্তিনামা করে ৫ লাখ টাকা আদায় করে। তারপর প্রার্থীর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদনপত্র গ্রহণ করে। এরপর প্রার্থীকে জানানো হয় যে, আপনাকে একটি পদের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। তবে নিয়োগপত্র পেতে হলে আরও দুই লাখ টাকা দিতে হবে। এভাবে সে ধাপে ধাপে ভুক্তভোগী চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে থাকে।

একপর্যায়ে ভুক্তভোগীদের একটি ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এভাবে চক্র বিভিন্ন ভিকটিমের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। তাদের বিরুদ্ধে সূত্রাপুর থানায় মামলা দায়ের করে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

জেইউ/জেডএস