জলবায়ু পরিবর্তন এ প্রজন্ম ও তরুণদের মানবাধিকারের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। এর ফলে তরুণ প্রজন্মের জীবন-জীবিকা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং অন্যান্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে উল্লেখ করেছেন আলোচকরা। তারা বলছেন, এ সংকট নিরসনে বৈশ্বিক প্রচেষ্টার সঙ্গে জলবায়ু আলোচনায় তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি।

শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) একশন এইড বাংলাদেশ আয়োজিত ওয়েবিনার ‘ক্লাইমেট জাস্টিস : ক্যাপচারিং ইয়ুথ ভয়েস ফ্রম গ্লোবাল সাউথ ইন দ্যা কনটেক্স অব প্যানডেমিক’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে আলোচকরা এসব কথা বলেন। ওয়েবিনারে বাংলাদেশসহ এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও ইউরোপের তরুণরা অংশগ্রহণ করেন।

ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও একশনএইড বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ পরিষদের সদস্য রেবেকা সুলতানা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

বক্তারা বলেন, জলবায়ু আলোচনায় তরুণদের অংশগ্রহণ ও মতামত জরুরি হলেও করোনার প্রভাব ও যথাযথ পলিসির অভাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। এমনকি আসন্ন কপ২৬ সম্মেলনেও বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে। জলবায়ু সংকট নিরসনে যারা বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমরা তাদের কাছে আশা করব যেন তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা হয়। যাতে বিশ্বের তরুণরা তাদের সিদ্ধান্ত ও উদ্বেগের কথা বিশ্বব্যাপী চলমান জলবায়ু সংকট নিরসন আলোচনায় তুলে ধরতে পারেন।

ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি) পরিচালক ও বাংলাদেশি জলবায়ু বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. সালিমুল হক বলেন, জলবায়ু সমস্যা সমাধানে অ্যাডভোকেসির চেয়ে বেশি জরুরি সরাসরি কাজ করা ও উদ্যোগী হওয়া। কপ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা না থাকা জলবায়ু সংকট নিরসনে তেমন প্রভাব ফেলবে না। আপনার এলাকার একটি সমস্যা বেছে নিন এবং মানুষদের ঐক্যবদ্ধ করুন।

একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির ভিডিও বার্তায় বলেন, বিশ্বব্যাপী তরুণরা তাদের সমস্যা ও চিন্তার কথা বিশ্বনেতাদের কাছে তুলে ধরতে চায় মূলত কপ২৬ প্লাটফর্মের মাধ্যমে। তবে এ বছর করোনা টিকার প্রশ্নে কপ২৬ সম্মেলন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না। বিশ্বের অনেক দেশ তাদের সমগ্র জনগোষ্ঠীকে টিকা দিতে সক্ষম হয়নি। অন্যদিক জনসংখ্যার অধিকাংশ যারা টিকা দেয়নি তারা তরুণ। বয়স ও অন্যান্য অনেক বাধার কারণে এটি হয়নি যা দুঃখজনক।

পরবর্তীতে ‘ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস বাংলাদেশ’র জলবায়ু কর্মী সায়লা সবনম রিচি করোনা মহামারিতে তরুণ প্রজন্মের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তার মতে, করোনার প্রেক্ষাপটে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি একদিকে যেমন- ব্যহত হয় তেমনি যৌন, প্রজনন, পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও অধিকার বিষয়গুলোতেও ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

এএসএস/ওএফ