চিত্রনায়িকা পরীমণির সঙ্গে ডিএমপির সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এডিসি গোলাম সাকলায়েনের কী ধরনের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, তাদের দুজনের মধ্যে কী কী ঘটেছে তার তদন্তের স্বার্থে কারাগারে থাকা পরীমণির কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ও তার কথিত মামা আশরাফুল ইসলাম দিপুর জবানবন্দি নিতে চায় পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত কমিটি। এজন্য কারাগারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, গোলাম সাকলায়েনকে তার পদ থেকে সরিয়ে পুলিশ অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) পশ্চিমে বদলির পর গত ১১ আগস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মাসুদ করিমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ডিএমপির নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপ-কমিশনার হামিদা পারভীন এবং সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আকতার। কমিটি ইতোমধ্যে দুই দফা সময় বাড়িয়ে আবারো ১৫ দিনের সময় চেয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে।

পরীমণি-সাকলায়েন কাণ্ড খতিয়ে দেখতে গঠিত তদন্ত কমিটিকে শুরুতে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। সেই হিসেবে গত ২৬ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। তবে তখন সময় চেয়ে নেয় কমিটি। এরপরও সাক্ষ্য নেওয়ার কাজ বাকি থাকায় মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) আরও ১৫ দিনের সময় চেয়ে পুলিশ সদর দফতরের ডিসিপ্লিনারি বিভাগে চিঠি দিয়েছে তদন্ত কমিটি।

তদন্ত কমিটির সদস্য সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আকতার ঢাকা পোস্টকে বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে যাকে যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন, সাক্ষ্যের প্রয়োজনে আমরা তা নিচ্ছি। কিছু বিষয় নতুন করে আমরা আমলে নিয়েছি। সেগুলোর কাজ করতে সময় প্রয়োজন। এজন্য নতুন করে কমিটি সময় চেয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরে।

পরীমণি, জিমি ও দিপুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে আমরা তা প্রকাশ করতে চাই না। তবে আমরা আরও ২/৩ জনের সাক্ষ্যের প্রয়োজন মনে করছি। আমরা তদন্তের মোটামুটি শেষ পর্যায়ে। আশা করছি বর্ধিত এই সময়ের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারব।

তবে তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা পোস্টকে জানান, পরীমণি ও সাকলায়েনের মধ্যকার ভিডিও প্রকাশের পর তাকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। পরে আরও একটি ভিডিও ফাঁস হয়। সেই ভিডিওতে পরীমণি ও সাকলায়েন ছাড়া আর কে কে উপস্থিত ছিলেন সেটা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা দুজনের নাম জেনেছি। তারা হলেন পরীমণির কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ও কথিত মামা আশরাফুল ইসলাম দিপু। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আটকের পর তারা দুজনেই কারাগারে রয়েছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে জামিন পর্যন্ত অপেক্ষা করার সুযোগ নেই। তাই যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে কারাগারে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। এছাড়া পরীমণিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আরও কিছু জিনিস নতুন করে যুক্ত করতে হচ্ছে। সেগুলো তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে হবে।

জেইউ/এসএম/জেএস