পাপুলকাণ্ডে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ ৪ শীর্ষ কর্তাকে তলব
কুয়েতের আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে বক্তব্য জানতে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ চার শীর্ষ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে তাদের আগামী ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হতে বলা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের সই করা চিঠি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
চিঠিতে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ও ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজুকে ১২ সেপ্টেম্বর এবং পরিচালক মো. আদনান ইমাম ও একে মোস্তাফিজুর রহমানকে ১৩ সেপ্টেম্বর হাজির হয়ে তাদের বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
২০২০ সালের ১১ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার স্ত্রী সাংসদ সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান এবং মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিদের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ১৪৮ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জেসমিন প্রধানের পাঁচটি হিসাবের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত লন্ডারিং হয় ১৪৮ কোটি টাকা। অথচ মাত্র ২৩ বছর বয়সী জেসমিনের নিজের কোনো আয়ের উৎস নেই।
২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর আদালতের অনুমতি নিয়ে কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার স্ত্রী সাংসদ সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান এবং মেয়ে ওয়াফা ইসলামের ৬১৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ বা অবরুদ্ধ করতে চিঠি দেয় দুদক।
ওই চিঠিতে পাপুল, তার স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের নামে থাকা হিসাবের বিষয়ে আটটি ব্যাংকের এমডিকে নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। এছাড়া তাদের নামে থাকা দেশের বিভিন্ন স্থানের মোট ৩০ দশমিক ২৭ একর জমি ও গুলশানের ফ্ল্যাট অ্যাটাচমেন্টের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
অন্যদিকে এফডিআর হিসাবের দুই কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার কোনো উৎস শ্যালিকা জেসমিন দেখাতে পারেননি, যে কারণে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে পাপুল, তার স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
অর্থ ও মানব পাচারের মামলায় গত ২৮ জানুয়ারি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় কুয়েতের আদালত। পাশাপাশি তাকে ১৯ লাখ কুয়েতি রিয়াল বা ৫৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
গত বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের বাসা থেকে আটক করা হয় পাপুলকে। আটকের সাড়ে সাত মাস ও বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর সাড়ে তিন মাসের মাথায় দণ্ডিত হন কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে চার বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ায় পাপুলের সংসদ সদস্য পদও (লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য) বাতিল করা হয়। ওই আসন শূন্য ঘোষণা করে গত ২২ ফেব্রুয়ারি গেজেট প্রকাশ করে জাতীয় সংসদ সচিবালয়।
আরএম/আরএইচ/জেএস