ঘায়ে ব্যান্ডেজ না করে ক্লিন করছি : আইজিপি
অপহরণ, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়া সদস্যদের বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, চাইলে আমরা এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পারতাম। কিন্তু আমরা ফৌজদারি মামলা দিচ্ছি। আমরা ঘায়ে ব্যান্ডেজ না করে একেবারে ‘ক্লিন’ করছি।
আজ (রোববার) বিকেলে পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, পুলিশ সদস্যদের মধ্যে কেউ কোনো অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইচ্ছা করলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পারতাম, ইচ্ছা করলে ঘায়ে ব্যান্ডেজ করতে পারতাম। কিন্তু আমরা এর মধ্যে নেই, এসব একেবারে ক্লিন করতে চাচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ফৌজদারি মামলা দেওয়া হচ্ছে।
ই-অরেঞ্জের কথিত পৃষ্ঠপোষক বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার দেশত্যাগে কারও গাফিলতি আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন আইজিপি।
তিনি বলেন, পরিদর্শক সোহেল রানা কীভাবে দেশত্যাগ করলো, তার দেশত্যাগে কারও গাফিলতি ছিল কি না সেসব বিষয়ে আজ সকালে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। তাই সোহেল রানাকে ফিরিয়ে আনা সমস্যা হবে না। যেহেতু সোহেল ভারতে একটি মামলার আসামি, সেই প্রক্রিয়া শেষ হলে অবশ্যই বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হবে। এটি স্পষ্ট যে সে অবৈধভাবে দেশ ত্যাগ করেছে।
এর আগে পুলিশের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে আইজিপি বলেন, আজকের দিনটি প্রশিক্ষণের দিক থেকে পুলিশের জন্য একটি বিশেষ দিন। আজ পুলিশ নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে বছরে যেন অন্তত একবার প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়। আমরা সেই লক্ষ্যে পুলিশের ২ লাখ ১২ হাজার সদস্যকে বছরে একবার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। প্রতি সপ্তাহে প্রতি ব্যাচে আমরা ৪ হাজার ৩১৯ জন সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিতে পারবো। সে হিসেবে এ বছরে ১৪ সপ্তাহে ৬০ হাজার ৬৬৬ জনকে প্রশিক্ষণ দিতে পারবো। সামনের বছর থেকে বছরব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলমান থাকবে। পুলিশের সকল সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিতে ৪৮ সপ্তাহ প্রয়োজন। কনস্টেবল থেকে অতিরিক্ত আইজি পদমর্যাদার প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের বছরে এক সপ্তাহ প্রশিক্ষণ প্রাপ্তির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়েছে।
এএসপি এবং তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি (বিপিএ) সারদায়, সাব-ইন্সপেক্টর থেকে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ বিপিএ, টিডিএস, টিটিএস, এসটিএস, পিএসটিএস সকল পিটিসি ও ডিএমপি ট্রেনিং একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে।
কনস্টেবল, নায়েক এবং এএসআই পর্যায়ের প্রশিক্ষণ ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের তত্ত্বাবধানে দেশের ১০৮টি পুলিশ ইউনিটের প্রশিক্ষণ ৫৫টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে।
বিপিএ, পিটিসি, সকল ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারসহ দেশের ১০৫টি পুলিশ ইউনিটের সকল পদমর্যাদার প্রশিক্ষণ একযোগে শুরু হবে, যা সারা বছর চলবে।
বোট ক্লাবের সভাপতিত্ব নিয়ে আইজিপিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি তো পার্লামেন্ট মেম্বার না, পার্লামেন্টের আলোচনা নিয়ে কি আমার কথা বলা ঠিক হবে? যেগুলো পার্লামেন্টে আলোচনা হয় সেগুলো পার্লামেন্টের ভেতরেই থাকে।’
প্রশ্ন করা সাংবাদিককে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনার ব্যক্তিগত কৌতূহল থাকলে ব্যক্তিগত কৌতূহল মেটানোর জন্য আমরা ব্যবস্থা নেব। কিন্তু পার্লামেন্টের সংসদ সদস্য যে বক্তব্য দিয়েছেন তার পাল্টা উত্তর আইজিপি দেবে না এই কারণে, পার্লামেন্টের কোনো কথার বিষয়ে বক্তব্য বাইরে দেওয়া যায় না।’
এআর/এনএফ