পুলিশের মহাপরিদর্শক (বেনজির আহমেদ) সরকারের অনুমতি নিয়ে বোট ক্লাবের সভাপতি হয়েছেন কি না তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হারুনুর রশিদ। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ প্রশ্ন উত্থাপন করেন।

হারুনুর রশিদ বলেন, আমার জানা নেই, ৫০ বছরের ইতিহাসে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ ধরনের কোনো ক্লাবে পুলিশের প্রধান সভাপতির দায়িত্ব বা এই রকম ক্লাব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেপরোয়া যেসব কর্মকাণ্ড, মাদক কারবারের সঙ্গেও তারা জড়িয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন বিএনপির এই সংসদ সদস্য।‌

তিনি বলেন, চিত্রনায়িকা পরীমণিকে গ্রেফতার ও জামিনের ঘটনাও বেশ নাড়া দিয়েছে। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর পরীমণি গণমাধ্যমে বলেছেন, কত নাটক করে তাকে ধরে নেওয়া হয়েছে। তাকে বলা হয়েছিল, শুধু অফিসে নেওয়া হবে আর কিছু জিজ্ঞাসা করা হবে। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা হয়।

হারুনুর রশিদ বলেন, পরীমণির ঘটনা তদন্তের তদারক কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়েছে। পরীমণির বাসায় অভিযান চালিয়েছিল র‍্যাব। র‍্যাব নিজেরা এ ঘটনা তদন্ত করার দাবি জানিয়েছিল। কারণ এর পেছনে অনেক বড় শক্তি জড়িত। এদের যারা ব্যবহার করছে, তাদের চিহ্নিত করা দরকার।

তিনি বলেন, পরীমণির ঘটনায় হাইকোর্ট পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আদালত বলেছেন, পরীমণি একজন নারী, অসুস্থ, চিত্রজগতের কর্মী—এ জন্য জামিন দেওয়া হয়েছে। এটা কোনো কথা হতে পারে? তাকে পরপর কেন তিন দিন রিমান্ডে নেওয়া হলো, এটি নিয়ে হাইকোর্ট জজকোর্টের নথি তলব করেছেন। এটা নিয়ে জনগণের মধ্যে ‘পারসেপশন’ ভিন্ন হচ্ছে। পরীমণিকে গ্রেফতারের ঘটনা নিয়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন তিনি।

মোসারাত জাহানের (মুনিয়া) আত্মহত্যায় প্ররোচনায় মামলা তদন্তের জন্য নতুন করে র‍্যাবকে দায়িত্ব দেওয়া হবে কি না, এ বিষয়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিবৃতি দাবি করেন হারুন।

তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে মুনিয়া নামে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছিল। আত্মহত্যা প্ররোচনায় মামলার পুলিশ ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছে। বসুন্ধরার এমডির সঙ্গে মুনিয়ার ফোনালাপ, তার সঙ্গে ছবিও গণমাধ্যমে এসেছে। এই ঘটনার তদন্তভার র‍্যাবকে দেওয়া হবে কি না। যদি না দেওয়া হয়, তাহলে তিনি মনে করবেন এসব অপরাধে যারা জড়িত, সরকার তাদের চিহ্নিত করতে চায় না, আড়াল করতে চায়। এ বিষয়গুলো নিয়ে সরকারের অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া দরকার। অপরাধগুলোর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এইউএ/এসকেডি/জেএস