সওজের প্রকৌশলীর স্ত্রীর এত সম্পদ!
সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জুনাইদ আহসান শিবিবের স্ত্রী শাহানা পারভীন। পেশায় গৃহিণী হলেও তার নামে রয়েছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবরে ১১.৪৫ কাঠা জমি, খিলগাঁও ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের বনশ্রী প্রকল্পে ১০.৭৪ কাঠা জমি, উত্তরা (তৃতীয় পর্ব) আবাসিক এলাকায় ৫ কাঠার ১টি প্লট, রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার একটি প্লট, এলিফ্যান্ট রোডে ১২৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ও বসুন্ধরা সিটিতে একটি দোকান।
এছাড়া ধানমন্ডির সোবহানবাগের ২৪০০ বর্গফুটের ১টি ফ্ল্যাট, ময়মনসিংহে ২ তলা বাড়ির ১/৬ অংশ, জামালপুরে ২ তলা বাড়ির ১/৬ অংশ তিনি দানসূত্রে পেয়েছেন। আর অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ব্যবসায় বিনিয়োগ, গাড়ি ক্রয়, জীবন বিমায় জমা, সঞ্চয়পত্র ক্রয়, হাতে নগদ ও ব্যাংক স্থিতি বাবদ মোট ৫০ লাখ ৮১ হাজার ২০১ টাকা আছে তার। এছাড়া বিয়ের উপহার হিসেবে ৫১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার পেয়েছেন শাহানা পারভিন।
বিজ্ঞাপন
এত সম্পদের মালিকানা থাকলেও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় শাহানা পারভীন ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে মাত্র দেড় কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে সম্পদের দলিল মূল্য হিসাব করা হয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে। বাস্তবে ওই সম্পদের মূল্য কয়েকগুণ বেশি।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকার বাদী হয়ে স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপপরিচালক) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় শাহানা পারভীনকে প্রধান আসামি এবং তার এত সম্পদ অর্জনে সহায়তাকারী হিসেবে সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জুনাইদ আহসান শিবিবকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মূলত তার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদকে বৈধতা দানের উদ্দেশে স্ত্রীর নামে এত সম্পদ করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদের সত্যতা পাওয়ায় সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর শাহানা পারভীন তার সম্পদ বিবরণী দুদকে দাখিল করেন । দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাই করে উল্লেখিত সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
সম্পদ বিবরণীতে ওই স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মূল্য দেখানো হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৯৬ লাখ ২৮ হাজার ৭৬৫ টাকা। এর মধ্যে ৫২ লাখ ১১ হাজার ৯৮২ টাকার বৈধ উৎস পাওয়া গেছে দুদকের অনুসন্ধানে। অর্থাৎ ১ কোটি ৪৪ লাখ ১৬ হাজার ৭৮৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ আছে তাদের। এই সম্পদ অবৈধ উপায়ে অর্জনের অভিযোগ এনে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরএম/এসএম/জেএস