নিজেকে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব পরিচয় দিতেন অভিযুক্ত সেকান্দার আলী

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব পরিচয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে সেকান্দার আলী (৫৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) নগরীর চাদগাঁও এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, গ্রেফতার সেকান্দার নিজেকে বন্দরের সচিব পরিচয় দিতেন সাধারণ মানুষের কাছে। বন্দরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে চারজনের কাছ থেকে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। প্রতারণা করাই সেকান্দারের একমাত্র পেশা।

পুলিশ জানায়, সেকান্দার নিজেকে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব পরিচয় দিয়ে বন্দরে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন কৌশলে গ্রহণ করেন তিনি। তার এ কাজে নুর মোহাম্মদ নামে একজন সহায়তা করেছেন। টাকা নেওয়ার পরে ইন্টারনেট থেকে ভুয়া নিয়োগপত্র সংগ্রহ করে চাকরিপ্রত্যাশীদের বাড়িতে পাঠাত চক্রটি। ভুয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের কাগজ ডাকযোগে থানায় পাঠানো হতো। থানা থেকে পুলিশ চাকরি প্রার্থীদের বাড়িতে গেলে সেকান্দার চুক্তির বাকি টাকা নিয়ে নিতেন। টাকা নেওয়ার পরে  সবধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিতেন তিনি।

পুলিশ কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিন বলেন, সেকান্দার পেশাদার প্রতারক চক্রের সদস্য। প্রতারণ করাই তার একমাত্র পেশা। সেকান্দার চাকরি প্রার্থীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সেকান্দার আলী বন্দরের নিলামযোগ্য পণ্য নিয়ে দেওয়ার কথা বলেও কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় জড়িত বাকিদের গ্রেফতার করা হবে।

জানা যায়, মো. আবুল কাশেম (৬৯) নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার মুরগীহাটা লেনের একজন চায়ের দোকানদার। নুর মোহাম্মদ নামে এক ব্যক্তি তার দোকানে প্রায়ই আসা-যাওয়া করতেন। তিনি প্রতারক সেকান্দার আলীকে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব বলে আবুল কাশেমের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে আবুল কাশেম তার ছেলেকে বন্দরে চাকরির জন্য নুর মোহাম্মদের মাধ্যমে সেকান্দারের সঙ্গে কথা বলেন। সেকান্দার তখন চাকরি পেতে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। তার কথায় বিশ্বাস করে ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা দেন আবুল কাশেম। জামানত হিসেবে তাকে একটি খালি চেক দেন সেকান্দার। এরপর ২০২০ সালের মার্চে তার ছেলে চাকরিতে যোগদান করতে পারবে জানিয়ে অবশিষ্ট টাকা দ্রুত দিতে বলেন সেকান্দার। তার কথায় বিশ্বাস করে ২৫ ফেব্রুয়ারি বাকি ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন আবুল কাশেম। কিন্তু মার্চ মাস পেরিয়ে গেলেও ছেলের চাকরির কোনো খবর না পাওয়ায় সেকান্দারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পান। এরপরই আবুল কাশেমের মনে সন্দেহ জাগে। পরে আবুল কাশেম কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ তদন্তে সেকান্দারের এমন প্রতারণার কথা জানতে পারে।

কেএম/এসকেডি