চীন থেকে ৩ মাসে আসবে ৬ কোটি টিকা
চীন থেকে ৩ মাসে দেশে ছয় কোটি টিকা আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা চায়নায় সাড়ে সাত কোটি টিকা অর্ডার দিয়েছি। প্রথমে অর্ডার দেওয়া হয় দেড় কোটি টিকার। কিছুদিন আগেই আমরা ছয় কোটি টিকা অর্ডার দিয়েছি। প্রতি মাসে দুই কোটি করে আগামী তিন মাসে এই ছয় কোটি টিকা চলে আসবে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে সাড়ে ১০ কোটি টিকার একটা প্রস্তাব আমাদের কাছে এসেছিল। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এবং ওনার অনুমতি সাপেক্ষে এই টিকা ক্রয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সাড়ে ১৬ কোটি টিকা আমরা ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
টিকাগুলো আগামী সেপ্টেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশের চলে আসবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ডব্লিউএইচও থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ টিকা আমরা বিনামূল্যে পাই, সেটা চলমান থাকবে। গতকাল আমরা ফাইজারের ১০ লাখ টিকা পেয়েছি। এটা এভাবে চলমান থাকবে।
আমাদের পরিকল্পনা হলো, সেপ্টেম্বর থেকে টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে দেড় থেকে দুই কোটি লোককে টিকা দেওয়া, বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, সেই সঙ্গে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মডার্নার যে টিকা আমরা পাব, তার বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীদের দেওয়ার চেষ্টা করব। আমাদের ছেলে-মেয়েরা টিকা দিয়ে স্কুলে যেতে পারলে ভালো।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউরোপ-আমেরিকাতে ফাইজার এবং মডার্নার টিকা বাচ্চাদের দেওয়া হয়েছে। তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বাচ্চাদের টিকা দিয়েছে। সে কারণে আমরাও এটা আমাদের দেশে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছি।
আরও বেশি করে স্প্রে করার প্রয়োজন ছিল : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘যে ক্যানেলগুলোতে পানি জমে থাকে, সেখানে এডিস মশার জন্ম হয়। বাড়ির আশপাশে যে ড্রেনগুলো আছে বা পাত্র পড়ে আছে, এসব জায়গায় এডিস মশা জন্ম নেয়। সেখানে আমাদের সিটি করপোরেশন স্প্রে করছে। আমি মনে করি, সেখানে যে স্প্রে করেছেন, আরও বেশি করে স্প্রে করার প্রয়োজন ছিল।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে হয়তো স্প্রে একটু কম হয়েছে, সে কারণে মশটা বেড়ে গেছে। মশা বেড়ে যাওয়ায় কারণে মানুষকে কামড়াচ্ছে এবং যার ফলে ডেঙ্গু রোগীর সৃষ্টি হচ্ছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনগুলোকে আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে আমরা অনুরোধ করব, আমাদের সিটি করপোরেশনগুলো যাতে আরও একটু তৎপর হয়, বেশি করে স্প্রে করেন। যাতে মশাগুলো ধ্বংস হয় এবং মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত না হয়।’
‘এখানে আমি মনে করি বেশি করে জোর দেয়া উচিত, যেসব জায়গায় পানি জমে আছে বড় আকারে, যেখানে লাখ লাখ মশা জন্মগ্রহণ করতে পারে, যেখানে বন্ধ নালা আছে, ড্রেন আছে বা পরিত্যক্ত বাড়ি-ঘর আছে, কনস্ট্রাকশনের যে বাড়ি-ঘর আছে সেখানে বেশি করে স্প্রে করা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর চাপ বাড়ছে। একদিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে, অন্যদিকে নন-করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। আবার ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসাও দিতে হচ্ছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘রাতারাতি তো হাসপাতাল করে ফেলা সম্ভব না। আমাদেরকে বিভিন্নভাবে কষ্ট করে করোনা ও নন-করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
এসএইচআর/এমএইচএস/ওএফ