৩০ জেলায় গ্যাস সরবরাহ করছে পেট্রোবাংলা
দেশের ৩০টি জেলায় গ্যাস সরবরাহ করছে পেট্রোবাংলা। উত্তরাঞ্চলে গ্যাস পৌঁছে দিতে চলমান সরবরাহ লাইনের কাজ শেষ হবে আগামী চার বছরে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ লাইনের কাজ শেষ হবে আগামী দশ বছরে।
বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের ১৪তম অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে সংসদকে এসব তথ্য জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বিজ্ঞাপন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৫ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রসমূহে বর্তমানে দৈনিক প্রায় দুই হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে দৈনিক প্রায় ২ হাজার ৪৮৪ মিলিয়ন ফুট গ্যাস উৎপাদন হয়েছে।
তিনি বলেন, আটটি গ্রাহক শ্রেণীতে সংরক্ষিত অনুমোদিত গ্যাস লোড অনুযায়ী দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের বর্তমান চাহিদা দৈনিক প্রায় ৩ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। পেট্রোবাংলার অধীন ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ক্যাপটিভ পাওয়ার, শিল্প, সার কারখানা, সিএনজি, গৃহস্থালি, বাণিজ্যিক ও চা বাগান শ্রেণীতে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় এলএনজি আমদানির মাধ্যমে ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০২১ সালের আগস্টে দৈনিক প্রায় ৭১১ মিলিয়ন ঘনফুট আরএলএনজি জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়েছে। অর্থাৎ বর্তমানে দেশে দৈনিক প্রায় তিন হাজার ৯৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।
সংরক্ষিত আসনের নারী সাংসদ খালেদা খানমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে পাবনা-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ হয়ে খুলনার আড়ংঘাটা পর্যন্ত উচ্চচাপ সম্পন্ন গ্যাস সঞ্চালন লাইন ২০১২ সালের জুলাইয়ে নির্মিত হয়েছে। এ লাইনের মাধ্যমে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, যশোর ও খুলনা জেলায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে গ্যাস রেগুলেটিং ও মিটারিং স্টেশনসমূহ স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কুষ্টিয়া জেলায় অবস্থিত গ্যাস রেগুলেটিং ও মিটারিং স্টেশন হতে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস বিতরণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে গ্যাস বিতরণ অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সে জন্য দরপত্র আহ্বানের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও ঝিনাইদহ, যশোর ও খুলনা জেলার পরিকল্পিত শিল্প এলাকায় (অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বিসিক) অবস্থিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে গ্যাস বিতরণের জন্য ইতিমধ্যে জরিপ কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া ১ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম সরওয়ার জাহানের প্রশ্নের জবাবে জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী জানান, পেট্রোবাংলার আওতাধীন ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানির মাধ্যমে ৩০টি জেলায় গ্যাস বিতরণ করা হচ্ছে। দেশের উত্তরাঞ্চলসহ মধ্যাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহের জন্য নতুন গ্যাস লাইন স্থাপনের জন্য কয়েকটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। যেগুলো আগামী চার বছরের মধ্যে শেষ হবে। প্রকল্পগুলো হলো, ধনুয়া-এলেঙ্গা এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়-নলকা, বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর, বাখরাবাদ-মেঘনাঘাট-হরিপুর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুতে গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প।
দীর্ঘ মেয়াদে আগামী ১০ বছরে (২০২২-২০৩২) দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহের জন্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, লাঙ্গলবন্দ-মাওয়া এবং জাজিরা-টেকেরহাট, খুলনা-গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট, সাতক্ষীরা (ভোমরা)-খুলনা (আড়ংঘাটা), পায়রা-বরিশাল এবং বরিশাল-খুলনা, টেকেরহাট-ফরিদপুর এবং টেকেরহাট-বরিশাল পর্যন্ত পাইপলাইন নির্মাণ।
বরিশাল- ৬ আসনের সংসদ সদস্য নাসরিন জাহান রতনার এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাস নিরাপত্তা বিধিমালা ১৯৯১ ধারা নম্বর ৩১ অনুযায়ী মাটির তলদেশে স্থাপিত এক ইঞ্চি ব্যাসের গ্যাস লাইনের গাত্র হতে সংরক্ষণীয় পূর্তকর্ম অর্থাৎ ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত দূরত্ব দুই মিটার।
এইউএ/আরএইচ