শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়মিত হেঁটে যাতায়াতে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি তাদের নিরাপদে হাঁটার পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর রায়েরবাজার হাই স্কুলের অডিটোরিয়ামে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত ‘অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াত’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন।

বক্তারা বলেন, সর্বশেষ আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে অনূর্ধ্ব ১৫ বছরের শিশুদের সংখ্যা ৫ কোটি ৮০ লাখের বেশি। যাদের জন্য পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের সুযোগ নেই। ফলে তারা অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। শিশুদের জন্য বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াত তাদের শারীরিক পরিশ্রমের চাহিদা পূরণের একটি সমাধান হতে পারে।

তারা আরও বলেন, নিয়মিত হেঁটে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের মাধ্যমে যেমন স্বাস্থ্য ভালো থাকবে তেমনি বন্ধুদের সাথে গল্প করতে করতে যাওয়ার মাধ্যমে সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ফলে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে। পাশাপাশি যান্ত্রিক যানবাহনের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণও হ্রাস করা সম্ভব হবে। কোভিড-১৯ এর সময় যানবাহনে বদ্ধ অবস্থায় যাতায়াতের থেকে হেঁটে যাতায়াত করা হলে সংক্রমণের আশঙ্কা কম থাকে।

অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা নাঈমা আকতার। তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের নগরে পর্যাপ্ত মাঠ-পার্ক নেই। ফলে শিশুরা তাদের প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রমের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। এতে ওজন বেড়ে যাওয়ায় ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, নিদ্রাহীনতা দেখা দেয় ও শিশুদের মধ্যে নেতিবাচক মানসিকতা তৈরি হয়। বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াতের মাধ্যমে সহজেই শিশুদের শারীরিক পরিশ্রমের চাহিদা পূরণ সম্ভব।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, ঢাকা শহরে স্কুলে হেঁটে ৩০ শতাংশ যাতায়াত হয়। অভিভাবকদের পছন্দানুযায়ী স্কুলে সন্তানদের পড়ানোর জন্য দূরত্ব বেশি হওয়ার কারণে গাড়ির উপর নির্ভরশীলতা দেখা যায়। অনেক সময় সামাজিক মর্যাদার ভ্রান্ত ধারণা থেকে অনেকে অল্প দূরত্বেও সন্তানদের গাড়ি দিয়ে আনা নেওয়া করেন। তবে হাঁটার পরিবেশ উন্নত না হওয়ার কারণেও অনেকেই গাড়ি অথবা রিকশার উপর নির্ভরশীল। শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়মিত হেঁটে যাতায়াতে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি তাদের নিরাপদে হাঁটার পরিবেশ তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রায়েরবাজার হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেসা, সহকারী শিক্ষক তাহাজ্জোত হোসেন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা প্রমা সাহা প্রমুখ।

এএসএস/এসকেডি