মোটা টাকায় ওয়েবসাইটে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পাস করাতেন তারা
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে অকৃতকার্যদের জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে দিত একটি চক্র। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জাল সার্টিফিকেটের ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছিল তারা।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর মােহাম্মদপুর, রমনা ও চকবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতার হওয়া চক্রের সদস্যরা হলেন : নূর রিমতি, জামাল হােসেন, এ. কে, এম মােস্তফা কামাল, মো. মারুফ, ফারুক আহম্মেদ স্বপন, মাহির আলমা ও আবেদ আলী।
এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অ্যাডমিট কার্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের নাম ও অনলাইন রেজাল্ট শিটের কপি জব্দ করা হয়।
শনিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।
হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেফতার নূর রিমতি ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর সিটি মডেল কলেজ থেকে অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হন। তবে তার ইতালি যাওয়ার জন্য এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট প্রয়ােজন হয়। তিনি জাল সনদ তৈরির জন্য তার মামা গ্রেফতার জামাল হােসেনের মাধ্যমে এ. কে. এম মােস্তফা কামালের সঙ্গে তিন লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তি অনুযায়ী মােস্তফা কামাল চক্রের বাকি সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে নূর তাবাসসুম নামে এক জনের সার্টিফিকেট সংক্রান্ত জেএসজি ও এসএসসি পাসের সব তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর তারা প্রথমে শিক্ষার্থীর বাবার নাম, মায়ের নাম সংশােধনের জন্য শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফরমেটে আবেদন করেন।
তিনি বলেন, শিক্ষা বাের্ডের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টাকার বিনিময়ে শিক্ষা বাের্ডের ওয়েবসাইটের রেজাল্ট আর্কাইভে নির্ধারিত ফরমেটে সংরক্ষিত কৃতকার্য শিক্ষার্থী নূর তাবাসসুমের তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী নূর রিমাতির তথ্যসমূহ আপলোডের মাধ্যমে জাল সনদ তৈরি করে। পরবর্তীতে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে নেয়। এমনকি শিক্ষা বাের্ডের ওয়েবসাইটেও এই ভুয়া তথ্য সংযােজিত দেখায়।
তিনি আরও বলেন, এই প্রতারক চক্র ঢাকা শিক্ষা বাের্ডসহ অন্যান্য শিক্ষা বাের্ডের বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখসহ অন্যান্য তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের তথ্য সংযােজন করে জাল সনদ তৈরির মাধ্যমে মােটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল দীর্ঘ দিন ধরে।
এমএসি/এসকেডি