চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর নেই, তারপরও দলটির নেতাকর্মীরা সেখানে গিয়ে বিশৃঙ্খলা করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তার কোনো প্রমাণ নেই। তিনি খুনি মোশতাকের মূলশক্তি ছিলেন। তিনি দেশের স্বাধীনতা ও অস্তিত্বে কখনও বিশ্বাস করতেন না। তাকে ধরে এনে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্র পাঠ করানো হয়। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরও জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির পিতা স্নেহ করতেন। মর্যাদা দিতেন। সেজন্য সেনাবাহিনীতে উপ-প্রধান পদ না থাকলেও জিয়াউর রহমানের সংসার রক্ষায় ঢাকায় এনে তাকে সে পদ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাকে সম্মানীত করেছিলেন। বিএনপি এসব জানা সত্ত্বেও চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার লাশ না থাকলেও এখানে এসে নাটক করে। খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়া কি কখনো তার লাশ দেখেছে? ওখানে একটা বাক্স নিয়ে এসেছিল। সেখানে গিয়ে মারামারি ধস্তাধস্তি কেন? মারামারি ধস্তাধস্তির অভ্যাস তাদের এখনো যায়নি।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্রখালাস করতে গিয়েছিল। জনগণ তাকে ঘেরাও করে আটকও করে। তাকে ধরে এনে স্বাধীনতার ঘোষণাপাঠ করানো হয়। প্রথমদিকে অনেক আপত্তি ছিল তার। জনগণের চাপে পাঠ করেছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা চেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যর্থ হোক, স্বাধীনতার চেতনা মুছে যাক, কিন্তু সেটা আমরা করতে দেব না। জাতির পিতার নাম তারা এখন আর মুছতে পারবে না। যে ইতিহাস তারা মুছতে চেয়েছিল, তারা আর পারবে না।

৭৫’র স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা দরিদ্র জাতিকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে দেবেন, সেই ওয়াদাই করেছিলেন। জাতির পিতা শুধু মুখেই বলেননি, মাত্র সাড়ে তিন বছরে তা করেও দেখিয়েছিলেন। সে সময়ও স্বাধীনতাবিরোধীরা অপপ্রচার করেছিল। চিলমারীতে বাসন্তী নামক পাগলকে জাল পরিয়ে দেখিয়েছে, কাপড় দিতে পারে না। অথচ তখন কাপড়ের দাম ছয়-সাত টাকা আর জালের দাম ১৫০ টাকা ছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল থেকে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ করব, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। আজকের বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার কমে ২০ শতাংশে নেমেছে, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে, রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাদের খান, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল, উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক আখতার হোসেন, উত্তরের  সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। গণভবন প্রান্তে স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ডক্টর আবদুস সোবহান গোলাপ।

এসআর/জেডএস