আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে
রাজধানীর রূপনগরে চোরাই মোবাইল উদ্ধারের নামে অভিযানে গিয়ে এক নারীর গরু বিক্রির আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। হাতিয়ে নেওয়া টাকা নিয়ে যেন ভুক্তভোগী মুখ খুলতে না পারেন তাই ইয়াবা কারবারির তকমা দিয়ে কোর্টে চালানের হুমকি দেন। পরে সন্দেহজনক হিসেবে পাঁচ আনি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে চালান করে দেয়।
ঘটনার পরদিন শুক্রবার (২০ আগস্ট) ওই নারী ব্যবসায়ীকে আদালত জামিন দেয়। শনিবার (২১ আগস্ট) ভুক্তভোগী নারী ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধে আইজিপি’স কমপ্লেইন মনিটরিং সেল ও ডিএমপি সদর দফতরে অভিযোগ দাখিল করেন।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী রাশিদা বেগম উল্লেখ করেন, রূপনগর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে পরিবারসহ বসবাস করেন। পেশায় তিনি একজন মৌসুমি ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি সরকার দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয়।
তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় পুলিশের সোর্স অপুর সঙ্গে রূপনগর থানার এসআই মো. মাসুদুর রহমান কয়েকজন নিয়ে আমার বাসায় চোরাই ৩০-৩৫টি মোবাইল রয়েছে বলে তল্লাশি চালায়। এসআই ঘরে দাঁড়িয়ে একজনের সঙ্গে এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কথা বলেন।
ওই এসআই তল্লাশি চালাতে গিয়ে ঘরের সব কিছু তছনছ করেও কিছুই পায়নি। এক পর্যায়ে ঘরে সংরক্ষিত দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা এসআই মাসুদুর রহমান পকেটে রেখে দুই নারী ভাড়াটিয়াসহ আমাকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে বলে, যদি আমি বের হয়ে টাকার বিষয়ে কাউকে কিছু বলি তাহলে আমাকে ৫০ পিস ইয়াবাসহ কোর্টে চালান দেবে।
তিনি দাবি করেন, পরে এসআইকে মাদকের মামলা না দেওয়ার অনুরোধ করেন। পরে টাকা ফেরত না দিয়ে সন্দেহজনক হিসেবে পাঁচ আনি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন (২০ আগস্ট) কোর্টে চালান করে দেয়। ওই দিনই কোর্ট থেকে জামিনে বাড়ি চলে আসি।
এ বিষয়ে রাশিদা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ঘরে কোরবানির গরু বিক্রির গচ্ছিত টাকা ছিল। আমার নামে কোনো মাদক মামলা নেই। আমি ইয়াবা কখনো চোখেও দেখিনি। আমি ক্যান্সারের রোগী। নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। আমি পা ধরেও হাতিয়ে নেওয়া আড়াই লাখ টাকা ফেরত পাইনি। উল্টো আমাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়। থানার গাড়ীতে না নিয়ে প্রাইভেটকারে করে আমাকে পাঁচ আনি মামলায় কোর্টে চালান করে দেয় এসআই মাসুদ।
রাশিদা বেগম বলেন, আমার আড়াই লাখ টাকা ফেরত চাই, হয়রানির প্রতিকার চাই। প্রতিকার পেতে ও এসআই মাসুদুর রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে শনিবার আইজিপি’স কমপ্লেইন মনিটরিং সেল ও ডিএমপি সদর দফতরে অভিযোগ করেছি।
পরিচয় দিয়ে রূপনগর থানার অভিযুক্ত এসআই মাসুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি একটি মিটিংয়ে আছেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে আর ফোন রিসিভ করেননি।
জেইউ/ওএফ