ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে (২১২) প্রতারক নারী চক্রের কবলে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন রোগীর তিন স্বজন। রাতে রোগীর স্বজন সেজে গল্পের ছলে তাদের জুস খাইয়ে অচেতন করে টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায় চক্রের সদস্য।

রোববার (২২ আগস্ট) সকাল ৯টায় ওই তিন জনকে অচেতন অবস্থায় জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। পরে তাদের পাকস্থলী পরিষ্কার করা হয়। তারা হলেন- জহুরা খাতুন (৬০), আমির হোসেন (৩৫) ও সুমনা (২০)।

রোগী সুমি আক্তারের ভাই হাসিবুল হোসেন শুভ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বোনকে গাইনি সমস্যার কারণে শুক্রবার (২০ আগস্ট) ঢামেক হাসপাতালের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডের ৫ নম্বর বেডে ভর্তি করাই। আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থানার জগন্নাথপুর থেকে এসেছিলাম বোনকে চিকিৎসা করাতে। এসে প্রতারকের হাতে সর্বস্ব হারালাম।

তিনি আরও জানান, আমার বোনকে দেখভালের জন্য আমার বোন সুমনা, মামা আমির হোসেন ও নানী জহুরা খাতুন হাসপাতালে ছিল। গতকাল রাতে হাসপাতালের করিডোরে এক নারী তাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় গল্প করে। গ্রাম থেকে এসেছে, শহরে যে নানা রকম মানুষ থাকে সেটা বুঝতে পারেননি তারা। গল্পের একপর্যায়ে তাদের জুস খাওয়ায়। এতে তারা অচেতন হয়ে পড়ে। সকালেও তারা সেখানেই অচেতন হয়ে পড়ে থাকে। সবাই মনে করে ঘুমিয়ে আছে। পরে আমি এসে ডাকাডাকি করি, কিন্তু তারা ওঠেন না। অচেতন থাকেন। তাদের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে একটু একটু কথা বলেন। পরে জানা যায়, জুসের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে তাদের খাইয়ে দিয়েছে।  তাদের ওয়াশ করা হয়েছে, এখন অনেকটা ভালো আছে। তাদের নিয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছি।

জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে এসে এভাবে চক্রের দ্বারা সর্বস্ব খুইয়েছেন। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি, প্রতারক ওই নারীকে আমরা সিসিটিভিতে দেখলাম। কিন্তু তাকে কেউ চিনতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা ওয়ার্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডেকে এনেছিলাম, তাদের এই নারীর ছবি দেখানো হয়েছে। তারাও কেউ চিনতে পারেনি। আমরা তাদের বলেছি এই নারীকে দেখতে পেলে আমাদের কাছে নিয়ে আসার জন্য। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিচালক জানান, ওয়ার্ডে কেউ এটেনডেন্ট পাশ ছাড়া প্রবেশ করতে পারবে না। সে বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তিনি রোগীর স্বজনদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। সামান্য পরিচয়ে কেউ কিছু দিলে খাবেন না।

এসএএ/এসএসএইচ