বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য সফল হতে দেয়নি শেখ হাসিনা
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘জাতীয় চার নেতা ও বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে খুন করা। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তার নীতি ও আদর্শ প্রতিষ্ঠায় যাতে কেউ নেতৃত্ব দিতে না পারে সে জন্য স্ত্রী-সন্তানসহ নিকটাত্মীয় এমনকি জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার জন্য তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি।’
সোমবার (১৬ আগস্ট) ঢাকায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ঘটনাচক্রে দেশের বাইরে থাকায় তারা বেঁচে যাওয়ায় পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রকারীদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। পঁচাত্তরের পর ছয় বছরের শরণার্থী জীবন শেষে ৮১ সালে দেশে ফেরেন। ১৫ বছর মরণপণ যুদ্ধ করে ২১ বছরের জঞ্জাল অপসারণ করে শেখ হাসিনার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়।’
টেলিযোগাযোগ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের যুগ্ন সচিব মুহাম্মদ আবদুল হান্নান, বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল মতিন ও টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবকে শোষণ-বঞ্চনা, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও শোষকদের বিরুদ্ধে আঘাত করেছিলেন। শোষিত ও বঞ্চিতদের পক্ষে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নিয়ে ছিলেন বলেই তাকে দেশি-বিদেশি চক্রান্তে হত্যা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপরিচালনার চার মূলনীতির মধ্যে জাতীয়তাবাদ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে। সমাজতন্ত্র উচ্চারিত হয়নি ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে বারবার আঘাত করা হচ্ছে।’
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘হাজার বছর ধরে ইরান-তুরান, আর্য-অনার্য, বৃটিশ-পাকিস্তানিরা এই উর্বর ভূখণ্ডটি শাসন-শোষণ করে সম্পদ লুট করেছে। বঙ্গবন্ধুই হাজার বছরের পরাধীন জাতিকে মুক্ত করেছেন। পৃথিবীতে বাংলা ভাষাভিত্তিক বাঙালির একমাত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে স্মরণ করতে হলে তাকে নিয়ে বিস্তারিত পড়াশোনা করতে হবে। তা না হলে বঙ্গবন্ধুকে সঠিক মূল্যায়ন সহজ হবে না।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার ১৯৪৮ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের উত্তরণের বিভিন্ন পেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘দেশের অগ্রগতিতে বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ ও গত ১২ বছরে অভাবনীয় উচ্চতায় বাংলাদেশকে উন্নীত করেছেন। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বিশ্বের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধু শোষিত, বঞ্চিত ও অসহায় দরিদ্র মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। শেখ হাসিনা গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে কাজ করছেন।’
এ সময়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুসারীদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে নিরলসভাবে কাজ করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
একে/ওএফ