পরীমণি ইস্যুতে এবার সিটি ব্যাংকের মামলা
কারাগারে থাকা চিত্রনায়িকা পরীমণি ইস্যুতে একটি সাধারণ ডায়েরি করার পর এবার মামলা করল সিটি ব্যাংক। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেছে তারা।
মামলায় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নিয়ে অনলাইনে অপপ্রচারের অভিযোগ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১৪ আগস্ট) দিবাগত রাতে গুলশান থানায় মামলাটি করেছেন সিটি ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস-প্রেসিডেন্ট (হেড অব কোর্ট) গাজী এম শওকত হাসান।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক, ইউটিউব, ওয়েবসাইট) সিটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতনদের বিরুদ্ধে চরিত্র হননের কথা বলা হয়েছে।
রোববার (১৫ আগস্ট) গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এজাহারে সিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জড়িয়ে প্রচার করা কয়েকটি ভিডিওর লিংক উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি জানান, যেসব ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলের বিরুদ্ধে সিটি ব্যাংক মামলা করেছে সেগুলো হলো-
১. ফেসবুক পেজ : ভাইরাল প্রতিদিন
২. ফেসবুক পেজ : Nayeem Korea
৩. ফেসবুক পেজ : ইলিয়াস হোসাইন
৪. ফেসবুক পেজ : CarHub BD
৫. ইউটিউব চ্যানেল : Khobor BD
৬. ইউটিউব চ্যানেল : MTIS BD VOICE
৭. ইউটিউব চ্যানেল : TALK WITH SHAWON
৮. ইউটিউব চ্যানেল : STAR NEWS BANGLA
৯. ইউটিউব চ্যানেল : London Bangla-লণ্ডনবাংলা
১০. ইউটিউব চ্যানেল : AROUND NEWS24
১১. ইউটিউব চ্যানেল : Probashi360
১২. ইউটিউব চ্যানেল : Monira Sultana Popy
ওসি মো. আবুল হাসান বলেন, মামলায় আসামি ‘অজ্ঞাত’ উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন : কাশিমপুরে পরীমণি, রজনীগন্ধায় আছেন কোয়ারেন্টাইনে
চিত্রনায়িকা পরীমণিকে সিটি ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাসরুর আরেফিন সাড়ে ৩ কোটি টাকার বিলাসবহুল গাড়ি উপহার দিয়েছেন বলে সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
এমন খবর প্রকাশের পর ৯ আগস্ট এক ফেসবুক পোস্টে ‘পরীমণিকে কখনো দেখেননি’ বলে জানিয়েছিলেন মাসরুর আরেফিন। পরে এ ঘটনায় ঢাকার গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব মিথ্যা-বানোয়াট তথ্য প্রচারের মাধ্যমে একটি চক্র সিটি ব্যাংক থেকে চাঁদাবাজির পায়তারা করছে। ১০ আগস্ট ঢাকা পোস্টকে জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান।
ওই জিডিতে ব্যাংকের হেড অব কোর্ট অপারেশন গাজী এম শওকত হাসান লিখেছিলেন, সিটি ব্যাংক অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছে। সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যম ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন অভিনেত্রীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জড়িত বলে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে। এই তথ্যকে পুঁজি করে সমাজের কিছু স্বার্থান্বেষী, প্রতারক ও চাঁদাবাজ বিভিন্নভাবে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নাজেহাল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে অথবা থাকতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন- পরীমণিকে কখনো দেখিনি : সিটি ব্যাংকের এমডি
জিডিতে আরও বলা হয়, এরূপ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিবর্গ এবং একটি স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে ব্যাংকের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টায় এবং ব্যাংক হতে অবৈধ পন্থায় অর্থ লাভের আশায় বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করছে এবং ভবিষ্যতে করতে পারে বলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এছাড়াও বর্তমানে এসব নিউজের কারণে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা, মানসিক উদ্বিগ্নতায় ভুগছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন : ১৮ ঘণ্টা পরীমণিকে নিয়ে সময় কাটান ডিবির তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা
জিডিতে বলা হয়, এসব তথ্য ছড়ানোর কারণে চাঁদাবাজির উদ্দেশে সাধারণ জনগণের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আশঙ্কা থাকে বিধায় এরূপ চাঁদাবাজ-প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করাসহ তাদের আইনের আওতায় আনা অত্যন্ত জরুরি।
এর আগে ৯ আগস্ট এ বিষয়ে একটি পোস্ট দেন সিটি ব্যাংকের মাসরুর আরেফিন। এতে তিনি লিখেছিলেন, আমি আমার বাপের জীবনে, এই মর্ত্যের পৃথিবীতে, এই ধরাধামে পরীমণি নামের কাউকে দেখিনি। অতএব, তার নম্বর আমার কাছে থাকার প্রশ্নই আসে না। এমনকি ‘বোট ক্লাব’ ঘটনার আগে পর্যন্ত পরীমণি নামটাও শুনিনি। আমার মানুষকে জিজ্ঞাসা করতে হয়েছিল যে, কে এই পরীমণি?
এআর/এইচকে