পরীমণির এক কাপড়ে থাকার তথ্যটি সঠিক নয়, দাবি সিআইডির
চিত্রনায়িকা পরীমণিকে গত ৪ আগস্ট আটক করে র্যাব। এরপর থেকে তিনি একই পোশাকে আছেন। ডিবি কিংবা সিআইডি কেউই তার জন্য পোশাক গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ পরীমণির আইনজীবীর। আজও একই পোশাক ও মাস্ক পরে আদালতে পরীমণিকে দেখা গেছে। যদিও পোশাক গ্রহণ না করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে সিআইডি।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বিকেলে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
পরীমণি গত ১২২ ঘণ্টা ধরে একই পোশাক ও মাস্ক ব্যবহার করছেন বলে তার আইনজীবীদের অভিযোগ। এ বিষয়ে আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমানের কাছে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা তো ডিফেন্সের কথা। তারা এটা দাবি করতেই পারেন। ডিফেন্স অনেক কথাই বলতে পারে। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরীমণিকে এখানে এনেছি। আমাদের এখানে তদন্ত সংশ্লিষ্ট অনেক সিনিয়র কর্মকর্তা আছেন। আমরা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করছি, পরীমণির আইনজীবীর অভিযোগ সত্য নয়।’
এর আগে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে পরীমণির রিমান্ড শুনানিতে আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভি বলেন, চিত্রনায়িকা পরীমণি গত ৪ আগস্ট র্যাবের হাতে গ্রেফতার হন। এরপর থেকে তিনি একই পোশাকে আছেন। ডিবি কিংবা সিআইডি কেউই তার জন্য পোশাক গ্রহণ করেনি। তাই বার বার আদালতে একই পোশাক পরে আসতে হচ্ছে তাকে।
শুনানি শেষে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরীমণি যেদিন গ্রেফতার হয়েছিলেন সেদিন যে পোশাকে ছিলেন আজ পর্যন্ত সেই একই পোশাকে আছেন। তার পোশাক নিয়ে পরিবারের লোকজন পুলিশের কাছে গেলেও তারা পরীমণির সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। পোশাকও গ্রহণ করেননি।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ পরীমণিকে আইনজীবীদের সঙ্গেও দেখা করতে দেয়নি। তাই আজ একই কাপড়ে আবার আদালতে এসেছেন পরীমণি।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, পরীমণির আইনজীবীর কথা সত্য নয়। সিআইডিতে আসার পর পরীমণি একাধিকবার পোশাক পরিবর্তন করেছেন। এছাড়া আদালতে যাওয়ার আগেও তিনি পোশাক পরিবর্তন করেছেন।
রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমণিকে হাজির করা হয়। তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকেও আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে পরীমণিকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে পরীমণিকে আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে মাদক মামলায় পরীমণির ফের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। একই মামলায় তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুরও ২ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আদালত থেকে বের হওয়ার সময় চিৎকার করে পরীমণি করে বলেন, ‘আমি নির্দোষ, আমাকে ইচ্ছা করে ফাঁসানো হয়েছে। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’ এরপরই তাকে আদালতের গারদখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে, বুধবার (৪ আগস্ট) রাতে প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমণি ও তার সহযোগীকে আটক করে র্যাব। তার বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। আটকের পর তাদের নেওয়া হয় র্যাবের সদর দফতরে। বুধবার রাতভর সেখানেই থাকতে হয় পরীমণিকে। বৃহস্পতিবার র্যাব-১ বাদী হয়ে মাদক আইনে পরীমণির বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলা দায়েরের পর সেদিনই তাকে আদালতে নেওয়া হয়।
জেইউ/এমএসি/এসকেডি