পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেছেন, বিশ্বের অনন্য অনুসরণীয় নারী হচ্ছেন বঙ্গমাতা। বাঙালির ইতিহাসে বঙ্গমাতার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পথে বঙ্গবন্ধুর পরই বঙ্গমাতার অবদান উল্লেখযোগ্য। জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সকল কার্যক্রম ও পদক্ষেপ বাস্তবায়নে নেপথ্যে ছিলেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুননেছা মুজিব। 

মঙ্গলবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনে বঙ্গমাতা’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

সচিবালয় নিজ দফতর থেকে অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়েছিলেন উপমন্ত্রী। এতে তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গমাতা ফজিলাতুননেছা মুজিবের পরামর্শকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। শত সংকটেও তিনি আস্থা ও বিশ্বাসে অবিচল ছিলেন। এছাড়া তিনি দলের দুঃসময়ে বঙ্গবন্ধুর নেতাকর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা যুগিয়েছেন এবং অনেককে সাধ্য মতো অর্থ সাহায্য করেছেন। 

আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, বঙ্গমাতা শুধু জাতির পিতার স্ত্রী ছিলেন না, ছিলেন রাজনৈতিক-দার্শনিক পথ প্রদর্শক ও ভরসার সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গমাতার ছিল বিজ্ঞ মতামত। বঙ্গমাতার জীবন আদর্শ আজ বিশ্বের নারীদের জন্য অনুকরণীয়। 

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে দুটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে বঙ্গমাতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ১৯৬৮ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুকে প্রধান আসামি করে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা। সেসময় বঙ্গবন্ধুসহ অন্যান্য রাজবন্দিদের মুক্তির জন্য তীব্র আন্দোলন হয়। পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে লাহোরে গোলটেবিল বৈঠকের আমন্ত্রণ জানায়। সে সময়ে বেগম মুজিব জেলখানায় বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করে প্যারোলে মুক্তি নেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানান। কারণ বঙ্গমাতা বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হবে। সত্যি সত্যিই গণ-আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে পরিণত হয় এবং পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। বেগম মুজিব প্যারোলে মুক্তির ব্যাপারে জোরালো আপত্তি না করলে পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হতো না।

পানি সম্পদ উপমন্ত্রী বলেন, আরেকটি ঘটনা হলো- ৭ মার্চের জনসভায় যাওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতার পরামার্শ চাইলেন। বঙ্গমাতা বললেন, তুমি সারাজীবন মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছ। মন থেকে যা বলতে ইচ্ছা করে- তাই বলবে। তার পরামর্শের যথার্থ প্রতিফলন দেখা যায় ঐতিহাসিক এ ভাষণে। বঙ্গমাতা উল্লেখিত দু’টি ঘটনায় প্রত্যক্ষ অবদান যদি না রাখতেন, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাস অন্য রকম হতে পারতো। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ফারজানা হকের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন উপ-উপচার্য ড. নুরুল আলম, অধ্যাপক শেখ মো. মুনজুরুল প্রমুখ। 

এইউএ/এনএফ