মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রোধে নেওয়া হচ্ছে নতুন প্রকল্প। এজন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে। 

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ থেকে প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হবে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। অন্যদিকে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করবেন। 

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ‘দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হবে। একনেকে অনুমোদনের পর প্রকল্পটি বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ৬২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২৩ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মহান মুক্তিযুদ্ধের অডিও-ভিডিও ফুটেজ ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দলিলপত্রাদি সংগ্রহ করে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে সংরক্ষণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ করা।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ফিল্ম মিউজিয়াম স্থাপন, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধি, দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক দুষ্প্রাপ্য ও ধ্রুপদী অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিল মুদ্রণ, পুনর্মুদ্রণ করা। এছাড়া দীর্ঘকালীন অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিল সংরক্ষণ এবং শিক্ষা ও গবেষণার জন্য সংগৃহীত অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিলগুলো সময়ে সময়ে পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনে পুনর্মুদ্রণ করা, মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত গ্রন্থ, সাময়িকী, প্রকাশনা, গানের বই, পোস্টার, প্রচারপত্র, স্থিরচিত্র, পাণ্ডুলিপিসহ আনুষঙ্গিক সামগ্রী সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা, মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিল আর্কাইভের সংগ্রহ থেকে নিয়মিত প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা। 

এছাড়া প্রকল্পের আওতায় আর্কাইভ ও চলচ্চিত্র সংক্রান্ত বিশেষায়িত লাইব্রেরিতে গবেষক, শিক্ষার্থী ও চলচ্চিত্রসেবীদের পড়াশুনার সুযোগ সম্প্রসারণ করা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ের ওপর সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ, সভা ইত্যাদির আয়োজন করা, দেশে বিদেশি ছবি এবং বিদেশে দেশীয় ছবি প্রদর্শনের জন্য চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করা।

পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেছেন, অডিও-ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে আর্কাইভে সংরক্ষণ করা হবে। তাছাড়া প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০০ মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে তথ্যচিত্র নির্মাণ করা হবে। ফিল্ম প্রিজারভেশন অ্যান্ড রেস্টোরেশন সিস্টেম আধুনিকায়ন ও শক্তিশালী করা হবে। ফলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিরোধ ও সঠিক ইতিহাস রচনা ও প্রকাশে আর্কাইভটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে।

এসআর/ওএফ