চট্টগ্রাম নগরী ও গ্রামে ছড়িয়েছে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট, যা অতি উচ্চ সংক্রমণশীল। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ও বিসিএসআইআরের উদ্যোগে পরিচালিত জিনোম সিকোয়েন্সের ফলাফলে দেখা গেছে, ৩০টি নমুনার মধ্যে ২৮টিতেই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, ৯৩ শতাংশ ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সংক্রমণ এখন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা হচ্ছে। বাকি দুইটি নমুনার মধ্যে একটিতে আলফা ভ্যারিয়েন্ট (ইউকে ভ্যারিয়েন্ট) এবং অপরটিতে লিনিয়েজ-এ ভ্যারিয়েন্ট।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, জিনোম সিকোয়েন্সের জন্য বিভিন্ন বয়সের আক্রান্ত রােগী থেকে নমুনাগুলো সংগৃহীত ছিল। এরমধ্যে পনেরটি নমুনা ছিল যাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, এর আগে চট্টগ্রাম অঞ্চলে আলফা (ইউকে ভ্যারিয়েন্ট) ও বিটা (সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট) ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি রিপাের্ট করা হয়েছিল। যদিও আলফা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি এখনাে আছে তবে তার শতকরা হার খুবই কম।

সিভাসু সূত্রে জানা গেছে, ত্রিশটি নমুনার মধ্যে  ১৫টি সিটি করপোরেশন এলাকার রােগীর এবং অবশিষ্ট ১৫টি বিভিন্ন উপজেলার রােগীদের থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। জিনোম সিকোয়েন্সে দেখা যায় চট্টগ্রাম শহর ও গ্রামাঞ্চলে সমভাবে এ ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে। নমুনাগুলো ১২ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারীর। ৩০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সের তথ্য পাবলিক ডাটাবেজ জিআইএসএআইডিতে জমা দেওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ, সম্প্রতি সিভাসু উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের সার্বিক নিদের্শনায় এবং পােস্ট্রি রিসার্চ ও ট্রেনিং সেন্টার (পিআরটিসি), সিভাসুর আর্থিক সহায়তায় সিভাসুর একদল গবেষক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। গবেষকদলে আছেন প্রফেসর ড. পরিতােষ কুমার বিশ্বাস, প্রফেসর ড. শারমিন চৌধুরী, ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. ত্রিদীপ দাশ, ডা. প্রনেশ দত্ত, ডা. মাে. সিরাজুল ইসলাম, ডা. তানভীর আহমদ নিজামী। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রােগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়ণ বিষয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তারা। 

এই গবেষণা কার্যক্রমের একটি অংশ হিসেবে গত ১ জুলাই থেকে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে সংগৃহীত ৩০টি নমুনা থেকে করােনাভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিনােম সিকোয়েন্স বা জীবন রহস্য উন্মােচন করার জন্য ঢাকায় বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদে (বিসিএসআইআর) প্রেরণ করা হয়। বিসিএসআইআর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাে. সেলিম খান ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা
ড. মাে. মােরশেদ হাসান সরকার এ গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন। 

কেএম/এইচকে