জনবল সংকটে চালু হচ্ছে না মহানগর হাসপাতালের আইসিইউ-এইচডিইউ
প্রতিদিনই ভয়ঙ্কর ভাবে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও। চারদিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) জন্য হাহাকার। করোনা আক্রান্ত রোগীর স্বজনরা এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে একটি আইসিইউ শয্যার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। কিন্তু বেশিরভাগ হাসপাতালেই আইসিইউ শয্যা ফাঁকা নেই বলে জানানো হচ্ছে।
চারদিকে যখন হাহাকার তখন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে পাঁচটি নিবিড় আইসিইউ এবং ১৫টি হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) থাকা সত্ত্বেও জনবলের অভাবে তা চালু করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞাপন
পুরান ঢাকার নয়াবাজার এলাকার মহানগর জেনারেল হাসপাতালে গতবছর ১৫০ শয্যার হাসপাতালটির ১০০ শয্যা করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হয়। তখন হাসপাতালের অন্য চিকিৎসাসেবাও বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু এ বছর মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ প্রকট রূপ নিলেও হাসপাতালটির করোনা বিভাগ এখনও চালু হয়নি। জানা গেছে, প্রায় সব প্রস্তুতি থাকার পরেও ডাক্তার ও নার্স চাহিদা মতো না পাওয়ায় চালু করা যাচ্ছে করোনা বিভাগ।
হাসপাতালটিতে দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ডাক্তার ও নার্স চেয়ে মন্ত্রণালয়ের কাছে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালটিকে করোনা রোগীর সেবা চালু করতে ৫৬ জন মেডিকেল অফিসার ও ৬০ জন নার্স চাওয়া হয়েছে। এখানে সাধারণ ওয়ার্ডে ৪০ জন ডাক্তার, ৪০ জন নার্স এবং আইসিইউর জন্য ১৬ জন ডাক্তার ও ২০ নার্স কাজ করবেন। এছাড়া কিছু টেকনোলজিস্ট, ওয়ার্ড বয় ও ক্লিনারের চাহিদাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী জনবল পাওয়া যাচ্ছে না। পেলেই সেবা চালু হবে।
ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালের সর্বশেষ তথ্য জানিয়ে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের বলেন, হাসপাতালের পক্ষ থেকে চাহিদার বিপরীতে কিছু চিকিৎসক, নার্স দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে করোনার জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসক এখনও দিতে পারেনি। এছাড়া হাই-ফ্লো ন্যাজাল টেকিনিশিয়ানও বিশেষায়িত লাগে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে অক্সিজেন প্লান্ট বসানো হয়েছে। কিন্তু সেই প্লান্ট থেকে আইসিইউ পর্যন্ত যে লাইন সেখানে একটা ফিল্টারিং লাগে, সেটা এখনও বসাতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরও বলেন, রেগুলার ডিউটির জন্য ডাক্তার দিয়েছে, কিন্তু আইসিইউ, এইচডিইউ পরিচালনা করার জন্য যেসব বিশেষ ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান এখনও দিতে পারেনি। তাই মহানগর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঝুঁকি নিচ্ছে না, করোনা রোগীসহ পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে যখন সার্ভিস দিতে পারবে না, তখন সমালোচনা বেশি হবে।
ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের বলেন, বিশেষায়িত ডাক্তার চেয়ে ইতোমধ্যে ৩ বার বলা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। ডিএসসিসি মেয়র সংশ্লিষ্ট সচিবের সঙ্গে কথাও বলেছেন এই বিষয়ে। চাহিদা অনুযায়ী জনবল পেলেই হাসপাতালটিতে সেবাগুলো চালু হয়ে যাবে।
এএসএস/এইচকে