রমনা পার্কে

সকাল সাড়ে ৬টা। সূর্যের মুখ তখনও দেখা যায়নি। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত রমনা পার্কের অরুণোদয় গেট দিয়ে প্রবেশ করছে সকালের যোগব্যায়ামের আগ্রহীরা। বাচ্চা থেকে বুড়ো, নারী-পুরুষ সকলের অংশগ্রহণে প্রায় হাজার খানেকের বেশি মানুষ এসেছেন এখানে। পার্কটিতে কোনো অসুবিধা না থাকলেও পরিচ্ছন্নতার অভাব রয়েছে বলে জানিয়েছেন আগতরা।

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে রমনা পার্ক ঘুরে দেখা যায়, হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন এই পার্কে। কেউ নতুন করে ঢুকছেন আবার কেউ বের হচ্ছেন। কেউ গ্রুপ ভিত্তিক শরীরচর্চা করছেন আবার কেউ নিচ্ছেন ক্যারাতে প্রশিক্ষণ। পার্কের রাস্তাগুলোতে পড়ে রয়েছে গাছের পাতা। কিছু কিছু জায়গায় ডাস্টবিনগুলো যেন উধাও হয়ে গেছে। শীতের ঝরা পাতার মৌসুমেও পার্কের বাগানগুলোতে ফুটেছে মৌসুমি ফুল।

পার্কটিতে পরিচ্ছন্নতা প্রয়োজন জানিয়ে ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম মান্নান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগে নিয়মিতই আসতাম। মাঝে কয়েক বছর আসা হয়নি। গত কয়েক মাস ধরে নিয়মিত আসছি। পার্কের পরিবেশ ভালো। সকালের মুক্ত হওয়া খেতে মানুষজন এখানে আসে। আমার দেখা মতে পার্কটিতে তেমন কোনো অসুবিধা নেই। তবে রাস্তায় গাছের পাতা পড়ে থাকে। পাতার উপর দিয়ে  হাঁটছে অসুবিধা হয়। আমি মনে করি, সকালবেলা এখানে পরিষ্কারের দায়িত্বে যারা থাকেন তাদের ডিউটিটা যদি নিয়মিত ঠিকভাবে না করেন, তাহলে এই সমস্যা হতে পারে।

উৎস গ্রুপের সঙ্গে কসরত করতে করতে ব্যবসায়ী আবদুস সালামও জানান পার্কটিতে পরিচ্ছন্নতার কিছুটা অভাব রয়েছে। পরিচ্ছন্নতা প্রয়োজন।

বিশুদ্ধ খাবার পানির দাবি জানিয়ে গৃহিণী শাহানা পারভীন বলেন, জায়গাটা অনেক খোলামেলা এবং সকলের অক্সিজেনের জন্য অনেক ভালো। আমি নিয়মিত এখানে হাঁটতে আসি। তবে এখানে যে টয়লেটগুলো আছে, সেগুলো নোংরা থাকে। যারা সেটি পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে থাকেন তারা কতটা দায়িত্ব পালন করেন সেটাই ভাবার বিষয়। সকালে হাঁটার সময় একটি খাবার পানির বোতল ক্যারি করা অনেক কষ্টের। তাই কিছু দূর পরপর যদি বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হতো তবে সেটি সকলের জন্যই ভালো হতো।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ৬ মাস বন্ধ থাকার পর পার্কটি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের ২৭ তারিখে আবার সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সকালের শিফটে পার্কটি খোলা থাকে সকাল ছয়টা থেকে ১০টা পর্যন্ত। বিকেলের শিফটে খোলা থাকে বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। সকালের শিফটে আশপাশের প্রায় হাজারও মানুষ এই পার্কটিতে আসেন সকালের নির্মল খাওয়া নিতে ও শারীরিক ব্যায়াম করতে। আগতদের তথ্যমতে এখানে কোনো ধরনের অসুবিধা নেই। তবে গাছের পাতা পড়ে রাস্তা নোংরা হয়ে থাকা এবং টয়লেট নোংরা থাকার বিষয়টি তারা জোর দিয়েছেন। এছাড়া পুরো পার্ক জুড়ে বিশুদ্ধ খাবার পানি রাখার বিষয়টি সংযোজনের আহ্বান জানিয়েছেন আগতরা।

এইচএন/এইচকে