শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফেরার বিড়ম্বনা কমাতে বিধিনিষেধে কিছুটা ছাড় দিয়ে আজ (রোববার) দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাস চলাচলের অনুমতি দিয়েছিল সরকার। এ সুযোগে রাজধানীর সড়কেও ঘুরেছে বাসের চাকা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরই বন্ধ হয়ে গেছে বাস চলাচল।

রোববার (১ আগস্ট) ভোর থেকে খুব সীমিত সংখ্যক বাস ও সিএনজি চালতি অটোরিকশা চলাচল করেছিল। নির্ধারিত সময়ের পর আর কোনো বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে বেশ কিছু সিএনজি চালিত অটোরিকশা এখনও চলাচল করছে। এছাড়া কাজের বাইরে বের হওয়া সাধারণ মানুষের বেশিরভাগ রিকশায় ও বাকি অংশ পায়ে হেঁটে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে চলাচল করতে দেখা গেছে।

যেহেতু স্বল্প সময়ের জন্য বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তাই অনেক বাস মালিক স্বল্প সময়ের জন্য বাস সড়কে নামাননি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

রাজধানীর রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ভিক্টর ক্লাসিক বাসের চালক রেজাউল করিম বলেন, কয়েক ঘণ্টার জন্য বাস চলাচলের অনুমতি পেয়ে আমাদের নির্দিষ্ট রুটে দুই ট্রিপ চলাচল করেছি। কিন্তু বেশিরভাগ বাস অল্প সময়ের জন্য সড়কে নামেনি। কারণ রাস্তায় নামলেই খরচ। কিন্তু অল্প সময় গাড়ি চালিয়ে লাভ হবে না, তাই অন্যরা গাড়ি নামায়নি। দুপুর ১২টার পর আমরা গাড়ি পার্কিং করে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু এভাবে আর কত দিন? আমাদেরও তো পরিবার আছে, গাড়ি চালালে আয়, না চললে বেকার থাকলে আমরা খাব কী?

রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় কথা হয় পথচারী মোখলেসুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সকালে মালিবাগ থেকে নতুন বাজার আসার সময় বাস চলছিল, যদিও ভাড়া বেশি নিয়েছে। দুপুর থেকে ফের বাস বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আবার মালিবাগ ফিরছি। বাস বন্ধ হলেও তো যেতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন রিকশায় যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। যেহেতু অনেক অফিসই খোলা, তাই সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে বাস চলাচল করতে দেওয়া উচিত। নইলে বেতনের টাকা রিকশা ভাড়া দিতেই চলে যাচ্ছে।’

এদিকে শনিবার সরকারি এক তথ্যবিবরণীতে বলা হয়, রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের কাজে যোগদানের সুবিধার্থে ১ আগস্ট দুপুর ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ ও বাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সেই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাস চললেও এরপরই চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকার ৫ আগস্ট পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দিয়ে রেখেছে। ওই সময় পর্যন্ত সব কারখানাগুলো বন্ধ থাকার কথা ছিল। তবে ঈদের পর থেকেই কারখানা খোলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিল্প-কারখানার মালিকরা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার গার্মেন্টসসহ রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।  

সরকারের ওই সিদ্ধান্তের পরই দেশের প্রতিটা অঞ্চল থেকে দলে দলে ঢাকাতে ফিরতে শুরু করেন শ্রমিকরা। তবে গণপরিবহন না থাকায় তাদের পড়তে হয় বিড়ম্বনা। পরিস্থিতি এড়াতে রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ ও বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

এএসএস/ওএফ