২৫ বছর হলেই পাবেন করোনার টিকা
২৫ বছর বা তার বেশি বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকরা এখন থেকে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে পারবেন। করোনার টিকা নিতে নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে বয়সসীমা ২৫ বছর ও তদূর্ধ্ব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে গিয়ে দেখা যায়, ২৫ বছরের বেশি বাংলাদেশি নাগরিকরা করোনার টিকা নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারছেন। ফলে ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সী বাংলাদেশিরা এখন থেকে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে পারবেন।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, করোনার টিকা দেওয়ার গতি বাড়াতে ৭ আগস্ট থেকে দেশে বিদ্যমান সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) কার্যকর করা হবে। গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্য অস্থায়ী টিকাদানকেন্দ্রগুলোও কাজে লাগানো হবে। দিনে সাড়ে ৮ লাখ করে প্রতি সপ্তাহে ৬০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে।
এদিকে সোমবার (২৬ জুলাই) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, করোনার টিকা দেওয়ার কার্যক্রম আরও জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ কার্যক্রম যেন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে শুরু করা যায়, সেই নির্দেশনাও দেন তিনি। ওয়ার্ড পর্যায়ে যেসব বয়স্ক লোক আছেন, তাদের ভ্যাকসিনেশনের (টিকাদান) ব্যবস্থা করা হবে। গ্রামের বয়স্ক রোগীরাই এখন বেশি হাসপাতালে আসছেন, এ সংখ্যা প্রায় ৭৫ শতাংশ। ঢাকা শহরেও তাই। তাদের মৃত্যুর হার বেশি, আক্রান্তের হারও ৯০ শতাংশ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের এপ্রিল নাগাদ দেশে আসবে ২১ কোটি ডোজ টিকা। চীনের সিনোফার্মের তিন কোটি ডোজ, অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ, কোভ্যাক্সের আওতায় সাত কোটি এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের সাত কোটি ডোজ টিকা আনতে এরই মধ্যে চুক্তি শেষ হয়েছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান উপদেষ্টা ও জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন সম্প্রতি ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, দিনদিন ভাইরাসের ধরন পরিবর্তন হচ্ছে। যেটি সর্বশেষ আসে, সেটি সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পৃথিবীর ১০০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যারা গণহারে টিকা দিতে পেরেছে, তারা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। প্রতিটি দেশেই সংক্রমণ ছড়ানোর নিয়ম যেমন এক, তেমনি নিয়ন্ত্রণের নিয়মও এক। যেহেতু নতুন ভ্যারিয়েন্ট আগের চেয়ে খুবই দ্রুত ছড়ায় এবং এর ক্ষতিসাধনের সক্ষমতাও বেশি; এ কারণে রোগীদের হাসপাতালে যেতে হচ্ছে, তীব্র কষ্ট অনুভব করছে। এটির প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব কেবল টিকার মাধ্যমে।
এদিকে প্রসূতি মায়েদের করোনা টিকার আওতায় আনার চিন্তা করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও। ন্যাশনাল ইমুনাইজেশন টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ নিয়ে শিগগিরই প্রসূতিদের টিকা কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানা গেছে।
সোমবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘প্রসূতিদের টিকার বিষয়টি নিয়ে আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বিষয়টিতে সম্মতি জানিয়েছেন। প্রসূতিদের টিকা প্রয়োগ নিয়ে জাতীয় কারিগরি কমিটির সঙ্গে আজ রাতে একটি মিটিং রয়েছে, তারা যে পরামর্শ দেবে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব।’
উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর দিন করোনার টিকার জন্য নিবন্ধনের জন্য ৪০ বছর বয়স সীমা নির্ধারণ করে সরকার। ওই দিন দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশনা দেন। এর আগে ৫৫ বছর বয়সীদের টিকার জন্য নিবন্ধন করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এরপর ৩০ বছর টিকা নেওয়ার বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এএইচআর/এসকেডি