কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় যুক্ত হতে যাচ্ছে জাতিসংঘ। এ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে একটি খসড়া চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। আশা করা হচ্ছে, আগস্টের শুরুতে চুক্তি চূড়ান্ত হলে সেপ্টেম্বর থেকে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করবে জাতিসংঘ।

বুধবার (২৮ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঢাকার জাতিসংঘের কর্মকর্তারা ভাসানচরে মানবিক সহায়তা ইস্যুতে বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সম্পৃক্ততার বিষয়ে খসড়া চুক্তিতে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। আশা করি, আগস্টের শুরুতে এটি সই হওয়ার পর সেপ্টেম্বর থেকে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করবে জাতিসংঘ।

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো থেকে শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তর নিয়ে জাতিসংঘের আপত্তি ছিল। তবে গত ১৭ মার্চ তিন দিনের সফরে ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের দেখতে যান জাতিসংঘের ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ভাসানচর ঘুরে আসা জাতিসংঘের কর্মকর্তারা প্রায় মাসখানেক পর ভাসানচর নিয়ে ইতিবাচক অবস্থানের কথা জানান। অর্থাৎ ভাসানচরে মানবিক সহায়তায় যুক্ত হওয়ার বিষয়ে সায় দেয় সংস্থাটি।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের প্রথম দেখতে যায় ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) একটি প্রতিনিধি দল। সর্বশেষ চলতি মাসের শুরুর দিকে ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের দেখতে যান ঢাকায় নিযুক্ত ১০ বিদেশি রাষ্ট্রদূত। সফর শেষে দাতা গোষ্ঠীদের এসব কূটনীতিকরাও ভাসানচর নিয়ে ইতিবাচক অবস্থানের কথা জানায়।

কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে অধিকতর নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয় করে ভাসানচর প্রস্তুত করে বাংলাদেশ সরকার। বছর দুয়েক আগেও ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা সম্ভব ছিল না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষেধাজ্ঞার কারণে।

তবে গতবছরের ডিসেম্বর থেকে জাতিসংঘের অনিচ্ছা সত্ত্বেও এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। এ পর্যন্ত ছয় দফায় ১৮ হাজার ৫২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে।

এনআই/এসএসএইচ