যাত্রীর কাছে ভাড়া বেশি, চালক বলছেন কম
রাজধানীর ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে জিগাতলা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ফয়সাল হাসান। চালকের সঙ্গে কথা বলে ভাড়া ঠিক করে রিকশায় উঠলেন। তার দাবি, লকডাউনের এ সময়ে রিকশাচালকরা অতিরিক্ত ভাড়া চাচ্ছেন। অন্যদিকে রিকশাচালক জয়নাল জানালেন, খুব বেশি ভাড়া তিনি দাবি করছেন না।
ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে ফয়সাল বলেন, আগে শংকর থেকে রিকশায় বাসায় যেতাম ৪০ টাকা ভাড়ায়, দুজন হলে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। সেই ভাড়া এখন দিতে হচ্ছে ৮০ টাকা। অসুস্থ থাকায় হেঁটে বাসায় যেতে পারছি না। রিকশাচালক ১০০ টাকা ভাড়া চাচ্ছেন। ৮০ টাকায় যেতে রাজি হয়েছেন। অন্যদিকে রিকশাচালক জয়নাল বলেন, রাস্তায় এখন মানুষজনের চলাচল কম। খুব বেশি ভাড়া নিচ্ছি না।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২৬ জুলাই) বিকেলে শংকর বাস স্ট্যান্ডে রিকশা খুঁজছিলেন ব্যাংকার শাহনাজ ইসলাম। ভাড়া না মেলায় হেঁটেই বাসার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, শংকর থেকে কাটাসুরের ভাড়া সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩০ টাকা। সেখানে কোনো রিকশাচালক ৫০ টাকার নিচে যাবেন না। তিনজনকে বললাম, সবারই এক কথা।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার সারাদেশে ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন অর্থাৎ ২৩ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে, যা চলবে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত। বিধিনিষেধ থাকায় কোনো গণপরিবহন সড়কে চলছে না। যাদের একান্ত বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন, তাদের একমাত্র বাহন হচ্ছে রিকশা।
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে অন্তত ১৫ জন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা হয়েছে ঢাকা পোস্টের। তারা কেউ সরাসরি রিকশা ভাড়া বেশি নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেননি। প্রত্যেকেই একে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়েছেন। তারা বলছেন, অনেকে যাত্রীদের বিপদে ফেলে বেশি ভাড়া আদায় করেন। তবে কম ভাড়াতেও যান অনেকে।
কলাবাগান মোড়ে কথা হয় রিকশাচালক মোহাম্মদ রিন্টুর সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন রাস্তা ফাঁকা, তাই ভাড়া-কমবেশি মিলিয়েই চলে। কলাবাগান থেকে শ্যামলীর ভাড়া সাধারণ সময়ে ৮০ টাকা। এখন রাস্তা ফাঁকা দেখে যাত্রীরাই কম দেয়। কখনও ৬০ থেকে ৭০ টাকাতেই যাই। অনেকে যাত্রীদের বিপদে ফেলে ১২০ টাকা পর্যন্তও আদায় আদায় করেন।
ধানমন্ডি ১৫ নম্বরের কেয়ারি প্লাজার সামনে কথা হয় রিকশাচালক বাহাউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, জিগাতলা থেকে মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ডের সাধারণ ভাড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আমাদের অনেকেই আছে এ ভাড়া কখনও কখনও ৭০-১০০ টাকাও নিয়ে থাকেন। সবাই ভালো, এটা তো বলা যাবে না। খারাপও আছে অনেকে।
এমএইচএন/আরএইচ