করোনায় ম্লান পুরান ঢাকার ঘুড়িবাজার
পৌষ মাস শেষের পথে। এ মাসের শেষের দিন উদযাপন করা হয় পৌষসংক্রান্তি। ‘পৌষসংক্রান্তি’ শুধু ‘সংক্রান্তি’ নামেও পরিচিতি। পুরান ঢাকার মানুষ একে বলে ‘সাকরাইন’। সাকরাইন উৎসবের অংশ হয়ে আছে ঘুড়ি ওড়ানো।
সাকরাইন উপলক্ষে হরেক রকমের ঘুড়ি দিয়ে সজ্জিত থাকে পুরান ঢাকার শাঁখারী বাজার, গেন্ডারিয়া, ওয়ারী ও সূত্রাপুরের দোকানগুলো। করোনাভাইরাসের কারণে এবার ঘুড়ি ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পুরান ঢাকার একাধিক ঘুড়ি ব্যবসায়ী।
বিজ্ঞাপন
সাকরাইন উদযাপন করতে গেন্ডারিয়ার বাসিন্দা সাফি হাসান ঘুড়ি কিনতে আসেন শাঁখারী বাজারে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাকরাইন আসলে হৈ চৈ হয় বন্ধুরা মিলে। বিভিন্ন রকমের খাওয়া-দাওয়া হয় একসাথে। ছোট থেকে অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে ঘুড়ি ওড়ানো নিয়ে। সাকরাইন উৎসবে অন্যরকম অনুভূতি পাই।
বিভিন্ন রকমের ঘুড়ি পাওয়া যায় সাকরাইন উপলক্ষে। যেমন- চিল ঘুড়ি, বাদুড় ঘুড়ি, ময়ূর, চানঁতারা, পাঞ্জাব, চোখদার, বড় চোখ ইত্যাদি। একটি ঘুড়ির সর্বোচ্চ দাম ২০০ টাকা ও সর্বনিম্ন দাম ৫ টাকা পর্যন্ত আছে।
সাকরাইনে দোকানে দোকানে ঘুড়ি, নাটাই, সুতা, মাঞ্জা সুতা, কাপড়ের চায়না ঘুড়ি, আবীর ইত্যাদি সাজানো থাকে। বিভিন্ন রকমের ঘুড়ি পাওয়া যায় সাকরাইন উপলক্ষে। যেমন- চিল ঘুড়ি, বাদুড় ঘুড়ি, ময়ূর, চানঁতারা, পাঞ্জাব, চোখদার, বড় চোখ ইত্যাদি। আকার ও দামভেদে ঘুড়ি বিভিন্ন রঙের ও রকমের হয়। সাধারণত একটি ঘুড়ির সর্বোচ্চ দাম ৩০ টাকা ও সর্বনিম্ন দাম ৫ টাকা। এছাড়া বাদুড় ঘুড়ি ও বড় চিল ঘুড়ি দাম ২০০ টাকা এবং ছোট চিল ঘুড়ি দাম ১০০ টাকা।
ঘুড়ির জন্যে আছে বিভিন্ন ধরনের সুতা। যেমন- ক্যাঙারু, বিচ্ছু, ড্রাগন ইত্যাদি। গজ হিসেবে সুতা পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা হয়। সুতার মান অনুযায়ী ৬০০ গজ সুতা ৭০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে পড়ে।
ঘুড়ি ওঠানোর জন্যে বিভিন্ন আকারের নাটাই রয়েছে। সাধারণত একটি নাটাই ২ ইঞ্চি থেকে সর্বোচ্চ ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। বাঁশের নাটাইয়ের সর্বনিম্ন দাম ৭০ টাকা ও সর্বোচ্চ দাম ৭০০ টাকা পর্যন্ত হয়। এছাড়া রূপার ও লোহার নাটাই পাওয়া যায়। সেগুলোর দাম আকারভেদে ৩০০ টাকার উপরে হয়।
শঙ্খশ্রী দোকানের মালিক রিপন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এবার প্রতিবছরের তুলনায় ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। অর্ডার কমে গেছে। চলছে মোটামুটি। আমরা বছরের বার মাসই ঘুড়ি-নাটাই ব্যবসা করি। সাকরাইন হিসেবে একটা অন্যরকম আমেজ সৃষ্টি হয় ব্যবসায়।
শাঁখারী বাজারের ঘুড়ি-নাটাইয়ের দোকান নিগম ভান্ডারের বিষ্ণু সেন বলেন, প্রতিবছর সাকরাইন উপলক্ষে একটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। সেটাকে কেন্দ্র করে বেশি করে দোকানে ঘুড়ি ওঠানো হয়। ঘুড়ি মোটামুটি বিক্রি হচ্ছে, তবে আগের মতো না।
এইচকে