প্রেসক্লাবে সাংবাদিক মিজানুর রহমানের তৃতীয় জানাজা

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের তৃতীয় জানাজা জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজা শেষে তার মরদেহ কর্মস্থল দৈনিক প্রথম আলোর অফিসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের টেনিস কোর্টে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সর্বস্তরেরে জনগণ অংশ নেন।

জানাজার আগে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, মিজানুর রহমান খান তার সন্তানদের নিয়ে যে স্বপ্ন দেখতেন তা যেন সফল হয়। তার স্বপ্ন পূরণে আমরা সরকারের কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে সহায়তা করবো।

এদিকে জানাজায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মিজানুর রহমান খানের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা ছিল। মিজানুর রহমান খান সাংবাদিকতায় উজ্জ্বল নক্ষত্র। আমরা তাকে সৎ নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে দেখেছি। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করেছেন, চাপের কাছে কখনো নতি স্বীকার করেননি। আমি মিজানুর রহমান খানের আত্মার শান্তি কামনা করছি।

প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, দুই দশক আগে দৈনিক মুক্ত কণ্ঠে তিনি আমার সহকর্মী ছিলেন। তার হাসি ছিলো খুবই অমায়িক। তিনি শুধুই সাংবাদিক ছিলেন না, এর বাহিরে তিনি একজন গবেষকও ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র নিয়েও গবেষণা করছেন।

এ সময় জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, মিজানুর রহমানের ভাই সিদ্দিকুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।

বাদ আসর তার তার মরদেহ রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

এর আগে বেলা ১১টায় মিজানুর রহমান খানের দ্বিতীয় জানাজা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতা, বিএফইউজে, ডিইউজেসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতা ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যরাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকেরা অংশ নেন।

জানাজা শেষে সাংবাদিকরা মিজানুর রহমান খানের মরদেহে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাবেক সভাপতি শাহজাহান সরদার, সাইফুল ইসলাম, ইলিয়াস হোসেন, সাবেক সহসভাপতি আজমল হক হেলাল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, ডিআরইউর সিনিয়র সদস্য রফিকুল ইসলাম রতন, প্রথম আলোর যুগ্ম-সম্পাদক সোহরাব হাসান, বিএফইউজের নেতা শাহিন হাসনাত, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মিজান মালিক, সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফ, ডিআরইউর সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক মেহদী আজাদ মাসুম প্রমুখ।

ডিআরইউতে মিজানুর রহমান খানের মরদেহে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেন

এদিন সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মিজানুর রহমান খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস,বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম, বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী, বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজাসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী ও সাংবাদিকরা অংশ নেন। নামাযে জানাজা শেষে মিজানুর রহমান রহমান খানের, মরদেহে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ফুল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ও ল রিপোর্টার্স ফোরামের পক্ষে থেকে সংগঠনটির সভাপতি মাসহুদুল হক ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াছিন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান (৫৩) ইন্তেকাল করেন।

মিজানুর রহমান খান গত ২৭ নভেম্বর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। প্রথমে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নেন। সেখান থেকে গত ১০ ডিসেম্বর তাকে মহাখালীর  ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রেখে চিকিৎসার একপর্যায়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। পরে সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা পাঁচ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এইচএন/এসআই/এমএইচএস