শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে অভিনব কায়দায় স্বর্ণ চোরাচালানের চেষ্টা করেছিলেন তারা। তরল এই স্বর্ণের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। যে কারণে বেশি লাভের আশায় ঈদের আগেই তারা স্বর্ণ চোরাচালানের চেষ্টা করেন। ঢাকায় ব্যবসায়ীদের কাছে এই স্বর্ণ বিক্রি করার মাধ্যমে বড় অংকের অর্থলাভের পা বাড়ান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার হওয়া তিন যাত্রী।

এর আগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনুমানিক ১৪ কেজি তরল স্বর্ণসহ তিন যাত্রীকে গ্রেফতার করে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- টাঙ্গাইলের রিয়াজুল হাসান (৪৬), কেরানীগঞ্জের মোহাম্মদ আমিন (৩৫) এবং সোনারগাঁওয়ের মোকারাম খাঁন (৩৩)। তাদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা হয়েছে।

বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার তিন যাত্রী তার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় অবতরণ করেন। বিমানবন্দরের কাস্টমস এলাকা অতিক্রমের পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আর্মড পুলিশের গোয়েন্দা দল তাদের আটক করে।

এ ব্যাপারে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, কাস্টমস ফাঁকি দেওয়ার জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে স্বর্ণ গুঁড়া করে এক ধরনের তরলের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্টের মতো করে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়।

তিনি জানান, তার্কিশ এয়ারলাইনসের টিকে-৭১২ ফ্লাইটে স্বর্ণ চোরাচালানের চেষ্টা হতে পারে এই গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর বিমানবন্দর এলাকায় সতর্ক অবস্থান নেয় এপিবিএন। নির্ধারিত ফ্লাইটটি ল্যান্ড করার পর কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পর তিন যাত্রী রিয়াজুল হাসান, মোহাম্মদ আমিন, মোকারাম খাঁন বিমানবন্দরের ক্যানোপি এলাকায় এলে তাদেরকে আটক করে আর্মড পুলিশ।

এসময় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রথমে স্বর্ণ চোরাচালানের কথা অস্বীকার করলেও তল্লাশির পর তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ কায়দায় অ্যাংকলেটের ভেতরে লুকায়িত অবস্থায় স্বর্ণ পাওয়া যায়। মোলায়েম পেস্টের মতো এবং এক ধরনের তরলের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় এই স্বর্ণে। তিন যাত্রীকেই তল্লািশির পর তাদের কাছে প্রায় ১৪ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে ওই তিন যাত্রী জানায়, শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যেই বিশেষ কৌশলে তারা স্বর্ণ চোরাচালানের চেষ্টা করছিলেন। নরম এই স্বর্ণে বেশি লাভের আশায় তারা ঈদের আগে চোরাচালানের চেষ্টা করেন। ঢাকায় ব্যবসায়ীদের কাছে এই স্বর্ণ বিক্রি করার মাধ্যমে বড় অংকের অর্থলাভের লোভেই এই পথে পা বাড়ান তারা। ইস্তাম্বুলে এক ভারতীয় নাগরিকের কাছ থেকে তারা এই স্বর্ণ সংগ্রহ করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক আরো জানান, উদ্ধার করা স্বর্ণের আনুমানিক বাজার মূল্য আট কোটি ৫০ লাখ টাকা।

জেইউ/জেডএস