ভালো দামের আশায় কুষ্টিয়া থেকে দুইটি গরু নিয়ে গাবতলীর কোরবানির পশুর হাটে এসেছেন হবিবুর রহমান। এক বছর ধরে গরু দুটিকে লালন-পালন করেছেন। হাটে প্রতিটির বিক্রির দাম চাইছেন ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা করে। কিন্তু ক্রেতারা দাম বলছেন ৮০-৮৫ হাজার টাকা। এমন দাম শুনে চুপ হবিবুর।

হতাশ কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘এক বছর ধরে এই গরু দুটিকে পালন করেছি। এখন ঢাকায় এসে এই পাচ্ছি। দেখে কী মনে হয়, এটা ৮০-৮৫ হাজার টাকার গরু? ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দাম চেয়েছি। কিন্তু ১ লাখ ১০ হাজার হলে দিয়ে দেবো। গরুর ওজন হবে প্রায় সাড়ে ৪ মণ। বাজার দেখে মনে হচ্ছে আমার এলাকাতেই গরুর দাম বেশি, এখানে কম। পাঁচ দিন বসে আছি, আর ২ দিন আছে। গরু তো ফেরত নিয়ে যাবো না, কম-বেশি বিক্রি করেই যাবো।’

রোববার (১৮ জুলাই) রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী গাবতলী কোরবানির পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, পশুর উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় অপেক্ষা করে যাচ্ছেন বেপারি। ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র দুই দিন। এখনও আশায় আছেন, তাদের পশু বিক্রি হবে এবং প্রকৃত ক্রেতারাই তাদের কাছে আসবে।

দিন গড়ালেই হাটে গরু নিয়ে আসা প্রতিজন বেপারিকে থাকা-খাওয়া মিলিয়ে গুনতে হচ্ছে ৫০০ টাকা। খরচের দিকে না তাকিয়ে আরা আছেন প্রত্যাশিত দামের অপেক্ষায়। গরু বিক্রি না হওয়ায় অনেকটা হতাশা প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গরুর বেপারিরা।

নাটোর থেকে ১৯টি গরু নিয়ে এসেছেন ৫ জন বেপারি। তাদের একজন পিয়ারুল একটি কালো রঙের মোটাতাজা গরু দেখিয়ে বলেন, এই গরুটি আমি ২ বছর পেলে বড় করেছি। দাম চেয়েছি ২ লাখ ২০ হাজার। মানুষজন দেড়লাখ টাকা পর্যন্ত দাম করে। আমরা ১৯টি গরু নিয়ে এসেছি। এগুলোর মধ্যে গত ৫ দিনে মাত্র ২টি গরু বিক্রি হয়েছে। এখন দেখা যাক আল্লাহ কী করেন। এলাকার চেয়ে ঢাকায় কম পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। সাইজ ভেদে প্রতি গরুতে এখানে ১২-১৫ হাজার টাকা কম।

ক্রেতারা হাটের সামনের অংশগুলোতে বেশি ঘুরছেন। কারণ সেখানে রয়েছে ব্যবসায়ীদের আকর্ষণীয় গরুগুলো। সেগুলো দেখেই ক্রেতারা ভেতরের অংশে যেতে হারিয়ে ফেলছেন। তবে হাটের ভেতরের অংশে আলাদা আলাদা জায়গায় রয়েছে ছাগল, ভেড়া, মহিষ আর গরুর অবস্থান। কিন্তু সেদিকটায় ক্রেতার উপস্থিতি অনেকটা কম।

এদিকে কিছুটা সচল আছে ছাগল, ভেড়া ও মহিষের বাজার। মানুষজন আসছেন, দেখছেন, দরদাম করছেন। পছন্দ হলে কিনেও নিচ্ছেন।

এমএইচএন/এমএইচএস