প্রস্তুত আফতাব নগর পশুর হাট, এবার বিক্রির পালা
গত কয়েক দিন ধরেই রাজধানীর পশুর হাটগুলোয় চলছে ব্যস্ততা। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কোরবানির পশু নিয়ে ট্রাক ঢুকছে হাটগুলোতে। একই অবস্থা রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী আফতাব নগর পশুর হাটেও। পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা কোরবানির পশু নিয়ে এ হাটে আসছেন। অন্যদিকে হাসিল ঘর ও কন্ট্রোলরুম স্থাপনসহ সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে হাট কর্তৃপক্ষ।
আফতাব নগরের ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার মাঠ পেরিয়ে রাস্তার পাশে ব্যবসায়ীরা গরুর খুঁটি বসানো শুরু করেছেন। হাট কর্তৃপক্ষও তড়িঘড়ি করে হাসিল ঘর এবং কন্ট্রোলরুম তৈরি করছে। তবে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) পর্যন্ত এ হাটে ক্রেতার উপস্থিতি চোখে পড়েনি। হাট কর্তৃপক্ষের দাবি, আজ শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবার জমে উঠবে আফতাব নগরের এ পশুর হাট।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মাঠগুলোয় খুঁটিতে সারিবদ্ধভাবে বাঁধা কোরবানির পশু। মাঠের পাশাপাশি ওই এলাকার বাসা-বাড়ির রাস্তাগুলো দখল করে রাখা হয়েছে গরু। তবে ক্রেতার দেখা মিলছে না। যে দু-একজন বাজারে আসছেন, তারা গরু দেখে চলে যাচ্ছেন।
হাট কর্তৃপক্ষ বলছে, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর থেকে বৃহস্পতিবার অন্তত দেড় থেকে দুইশ গরুবোঝাই ট্রাক এসেছে বাজারে। ব্যবসায়ীরা গরুগুলোকে খাবার দিচ্ছেন, থাকার জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন।
ইজারাদার ওমর শরীফ দিপু ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাটের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, আজ থেকে গরু বিক্রি শুরু হবে। এবার ১৩টি হাসিল ঘর বসিয়েছি। হাসিলের পাশাপাশি হাটে ২০-২৫ জন পশু চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করবেন। গরু ব্যবসায়ীদের যখন যা প্রয়োজন, তা আমাদের কাছে বললেই পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর এলাকার পাশাপাশি ফরিদপুর, রাজবাড়ী, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোণা এবং কিশোরগঞ্জ থেকে এ হাটে গরু নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। করোনার এ সময়ে আমাদের লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক গরু এরইমধ্যে হাটে চলে এসেছে।
কুষ্টিয়া থেকে ১৭টি গরু নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে আফতাব নগরে আসা ব্যবসায়ী লেয়াকত আমীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুই বছর পর এবার এ হাটে গরু নিয়ে এসেছি। বিকেল পর্যন্ত ক্রেতার দেখা পাওয়া যায়নি। আশা করছি আজ থেকে বিক্রি শুরু হবে।
গরুর দাম কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এবার গরুর দাম একটু বেশি। গতবার যেমন গরু এক লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি, এবার তেমন গরু কিনতে হয়েছে এক লাখ ৩০ হাজার টাকায়। তাছাড়া এক বছর লালন-পালন করেছি। সব মিলে একটি গরুর পেছনে অনেক টাকা লগ্নি করতে হয়েছে। তাই এক লাখ ৭০ হাজার টাকা বিক্রি না হলে লোকসান গুনতে হবে।
তিন ভাই মিলে দুটি গরু কিনতে আসা এরশাদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুটি গরু কেনার জন্য এসেছি। গতবার যে আকারের গরু এক লাখ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম, এবার সে আকারের একটি গরুর দাম চাচ্ছে দুই লাখ টাকা। চার মণ ওজনের দুটি গরুর দাম দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বললাম, দিল না। সাড়ে তিন লাখের নিচে দেবে না বলে জানিয়ে দিল।
উল্লেখ্য, এবার দুই সিটি করপোরেশনে দুটি স্থায়ীসহ ২১টি হাট বসানো হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরে গাবতলী স্থায়ী হাট ছাড়াও নয়টি অস্থায়ী হাট বসানো হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণে সারুলিয়ার স্থায়ী পশুর হাট ছাড়াও ১০টি অস্থায়ী হাট বসানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে ঢাকায় ২১টি পশুর হাট বসেছে। দুই সিটি করপোরেশনের ঘোষণা অনুযায়ী, ১৭ জুলাই থেকে ২১ জুলাই (ঈদের দিন) পর্যন্ত পাঁচ দিন হাটে কোরবানির পশু বেচা-কেনা হবে।
এমআই/এসকেডি