সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল স্থাপন না করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজ। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর সিআরবি এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়। 

এ সময় সিআরবি এলাকায় হাসপাতালে নির্মাণের যে ঘোষণা দিয়েছে রেলওয়ে তা থেকে সরে না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। 

নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের ব্যানারে ‘চট্টগ্রামের প্রকৃতি ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে সিআরবিতে হাসপাতাল চাই না’ শীর্ষক প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচিতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে।  

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত বলেন, সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়া বাতিলের এ দাবি চট্টগ্রামবাসীর। প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই চট্টগ্রামবাসীর এ দাবি বিবেচনা করবেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধী নই। কিন্তু সিআরবির প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করে হাসপাতাল করতে দেওয়া হবে না। যতদিন পর্যন্ত হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত রেলওয়ে প্রত্যাহার করবে না, ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।

কবিও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, সিআরবিতে কোনোভাবেই হাসপাতাল হতে দেওয়া যায় না। আমরা পুরো সিআরবিকে রক্ষা করার জন্য বলেছি। সিআরবি একটি ঐতিহাসিক জায়গা। এই সিআরবির ইতিহাস আছে, প্রাকৃতিক ঐতিহ্য আছে। বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগের ২৪ ধারায় বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক স্থাপনা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থানগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। এটি সিআরবির ওপর প্রযোজ্য। ফলে এই জায়গাটি কোনোভাবেই একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক হাসপাতালের জন্য দেওয়া যায় না।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, সিআরবিতে হাসপাতাল হবে বলে রেলমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন, তার বক্তব্যে চট্টগ্রামবাসীর মনে আঘাত লেগেছে। রেলমন্ত্রীকে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানাই। 

তিনি বলেন, সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতালের কোনো প্রয়োজন নেই। আমি বিশ্বাস করি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে উপেক্ষা করে, ঐতিহ্য, জীববৈচিত্র্য  ও উদ্ভিদ নষ্ট করে কোনো উন্নয়ন হতে পারে না। অবিলম্বে এই হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানাই।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, সিআরবিতে হাসপাতাল হলে শুধু সিআরবির পরিবেশ নষ্ট হবে তাই নয়। হাসপাতালের বর্জ্যের কারণে এনায়েত বাজার, গোয়ালপাড়া, লাভলেইনসহ আশেপাশের এলাকার জনজীবনও হুমকির মুখে পড়বে। তাই সিআরবিতে হাসপাতাল না করে অন্য জায়গায় হাসপাতাল করার দাবি জানাচ্ছি।
 
কর্মসূচি চলাকালে সিআরবির যে স্থানটিতে হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে সেখানে গাছের চারা রোপণ করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

কেএম/এসকেডি