সড়কে কোনো বাহন দাঁড়াতেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন যাত্রীরা
ঘড়ির কাঁটায় সকাল সাড়ে ৯টা। ওভার ব্রিজের নিচে দাঁড়িয়ে ৩০ এর বেশি মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার উদ্দেশে ঘর থেকে বের হয়েছেন তারা। কিন্তু কোনো যানবহন পাচ্ছেন না। মাঝেমধ্যে দু-একটি মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা অথবা ব্যক্তিগত গাড়ি থামলেই হুমড়ি খেয়ে সবাই ওঠার চেষ্টা করছেন।
বিজ্ঞাপন
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারের দেওয়া কঠোর বিধিনিষেধের আজ শেষ দিন বুধবারে (১৪ জুলাই) রাজলক্ষ্মী মোড়ে এ দৃশ্য দেখা যায়। গত কয়েকদিনের চেয়ে আজ একটু ভিন্ন চিত্রই দেখা গেল উত্তরার এ সড়কে। একমাত্র গণপরিবহন ছাড়া সব ধরনের যানবহনের উপস্থিতিতে বোঝার উপায় নেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। প্রতিদিনই শ-শ লোক মারা যাচ্ছেন।
এসব যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেউ অফিসের উদ্দেশে কেউবা ব্যবসার কাজে বের হয়েছেন। অনেকেই পারিবারিক কাজেও সড়কে এসেছেন। কিন্তু পরিবহন না পাওয়ায় অনেকেই বেশ বিপাকে পড়েছেন।
রাজধানীর উত্তরার বিমানবন্দর, রাজলক্ষ্মী, হাউজ বিল্ডিং, আজমপুর, জসিমউদ্দিন সড়কসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রধান এ সড়কে আগের চেয়ে রিকশার উপস্থিতি অনেক বেশি রয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা, স্টাফ বাসসহ বিভিন্ন মালবাহী গাড়ি রাস্তায় দেদারছে চলছে। অনেকেই হেঁটেও গন্তব্যের উদ্দেশে ছুটছেন। মোটরসাইকেলে দুজন করে যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেল।
সকাল থেকেই সড়কে মানুষের উপস্থিতি যেন চোখে পড়ার মতো। এদিকে অন্যান্য দিনের মতো আজও আজমপুর উত্তরা পূর্ব থানার সামনে চেকপোস্টে চেক করতে দেখা গেছে। তবে খুবই শিথিলতা দেখানো হচ্ছে। গাড়ির চালকদের সঙ্গে কথা বলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে গাড়িগুলো।
নতুন বাজার এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশে এক যাত্রী অপেক্ষা করছেন। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করেও কোনো যানবহন পাচ্ছেন না তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ যাত্রী জানান, উত্তরার এ জায়গা থেকে রিকশাওয়ালারা যেতে চায় না নতুন বাজারের দিকে। এ কারণে প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাস খুঁজছেন। কিন্তু পাচ্ছেন না। সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত খুব বিরক্তিও প্রকাশ করেন এ যাত্রী।
গুলিস্তানের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য রাজলক্ষ্মী মোড়ে অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছেন দেলোয়ার। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সবকিছু খোলা রেখে শুধুমাত্র গণপরিবহন বন্ধ করে লকডাউন চললে সুফল মিলবে না। যাদের জরুরি প্রয়োজন সেই প্রয়োজন তারা কীভাবে মেটাবে, এ দায়িত্বটাও নেওয়া উচিত সরকারের।
উদাহরণ টেনে তিনি জানান, তার আত্মীয় স্বজনেরা বিদেশে থাকে। ওইসব দেশে যাদের সমস্যা হচ্ছে তাদের খাবার ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে সরকার। কিন্তু এদেশে তো শুধু সাধারণ মানুষ হয়রানি আর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এখন কী আর করা সরকারি সিদ্ধান্ত তো মেনে নিতেই হবে।
একে/এসএম