উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যার কারণে লবণাক্ত পানির প্রবেশ নিরাপদ পানির দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহকে হুমকির মুখে ফেলছে। ফলে প্রতিবছর দুই কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং তাদের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়াটার এইডের ‘মিশন ক্রিটিক্যাল : ইনভেস্ট ই ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন ফর এ হেলদি অ্যান্ড গ্রিন ইকোনমি রিকভারি’ শিরোনামে প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আগামী দুই দশক পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন বা স্বাস্থ্যবিধিতে (ওয়াশ) বড় অংকের বিনিয়োগ করে সবার জন্য সুপেয় পানি, পরিচ্ছন্ন টয়লেট এবং হাইজিন নিশ্চিত করার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি চাঙা হতে পারে। জনস্বাস্থ্যের জন্য কোভিড-১৯ মোকাবিলায় পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন বা স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) খাতে সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীদের বিনিয়োগ অপরিহার্য, যা আর্থিক প্রণোদনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এবং ভবিষ্যতে অতিমারি মোকাবিলার প্রস্তুতি পরিকল্পনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালে বাংলাদেশ বন্যার কবলে পড়ে বন্যা পুনর্বাসন ও ওয়াশ (ওয়াশ) সুবিধা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে ব্যয় হয় প্রায় ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। অথচ জলবায়ু সহিষ্ণু পরিষেবার জন্য মাত্র ৯ কোটি ডলার ব্যয় করলে এ ক্ষতি এড়ানো যেত। বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় নলকূপ থেকে পানি সংগ্রহ করা একটি সাধারণ বাস্তবতা। মৌলিক পানীয় জল পরিষেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বিশ্বে প্রতি বছর নারীর ৭ কোটি ৭০ লাখ কর্মদিবস বাঁচানো সম্ভব, যা তাদের কাজের ও জীবিকার বিকল্প সুযোগ খুঁজতে সহায়তা করতে পারে।

এ বিষয়ে ওয়াটার এইডের প্রধান নির্বাহী টিম ওয়েনরাইট বলেন, অতিমারির আগের পরিস্থিতি আবার ফেরত নাও আসতে পারে। কোভিড-১৯ মোকাবিলা, সম্ভাব্য অতিমারির প্রস্তুতি এবং সবুজ বা পরিবেশবান্ধব পুনরুদ্ধার পরিকল্পনায় পানি, স্যানিটেশন এবং হাইজিনকে প্রাধান্য দিয়ে সঠিক কাজটি করতে এবং সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিতে আমরা সরকার, দাতাসংস্থা  এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, ওয়াশ খাতে অধিক বিনিয়োগ করে তুলনামূলক কম ব্যয়ে অর্থনৈতিক সুযোগ ও স্বাস্থ্য সংরক্ষণের সম্ভাবনা উন্মোচন করা সম্ভব। কোভিড পরবর্তী প্রণোদনা ব্যয়ের মূল উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়নে এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু ঝুঁকিসমূহ মোকাবিলায় এই বিনিয়োগ সহায়ক হতে পারে।

এআর/এসকেডি