চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। গণপরিহনের পাশাপাশি বন্ধ হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সিও। সড়কে নেই যানবাহনের ভিড়। মানুষের আনাগোনাও কম। এমন পরিবেশে হাতিরঝিলে মাছ ধরার ধুম পড়েছে।

রোববার (৪ জুলাই) বিকেলে গুলশানের দিকে যাওয়ার পথেই গুদারাঘাটে বেশ কিছু উৎসুক মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ল। ঘাটে দাঁড়িয়ে উৎসাহ নিয়ে তারা কিছু একটা দেখছেন। এগিয়ে যেতেই দেখা গেল, যেখানে ওয়াটার ট্যাক্সিগুলো দাঁড়ায় সেখানে কয়েকজন বড়শি দিয়ে মাছ ধরছেন।

হাতিরঝিলের মাছ! তাও আবার বিশাল আকারের। বিষয়টি অনেকের কাছে খুবই আগ্রহের। তাই ভিড় জমিয়েছেন ওয়াটার ট্যাক্সি ঘাটে। দেখছেন মাছ ধরা। মানুষ দেখে আরও ভিড় বাড়ছে। শুধু গুদারাঘাটই নয়, এখান থেকে পুলিশ প্লাজা পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তায় নিচের দিকে হাতিরঝিলের দুই পাশে এভাবে অনেকেই বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে।

গুদারাঘাটে হুইল বড়শি দিয়ে মাছ শিকারীদের মধ্যে একজন সুলতান আহমেদ বলেন, লকডাউনে হাতিরঝিলে ওয়াটার ট্যাক্সি চলছে না। ঘাট ফাঁকা, তাই আমরা ঘাটে বড়শি দিয়ে মাছ ধরছি। আমরা প্রায়ই হাতিরঝিল থেকে মাছ ধরি। হুইলে টেটার মত বড়শি লাগানো থাকে। এটা দূরে ছুঁড়ে মারি। এরপর জোরে টানতে থাকি। এভাবে কোনো মাছের শরীরে বিঁধলে ওই মাছ বড়শিতে আটকে যায়। হাতিরঝিলে বেশিরভাগ বড় পাঙাস ও মাগুর মাছ এভাবেই ধরা হয়।

ইদ্রিস আলী নামের আরেকজন বলেন, আমরা প্রায়ই হাতিরঝিলে মাছ মারি। লকডাউন হওয়ায় এখন একটু বেশি সময় ধরে মাছ ধরছি। লকডাউনে ওয়াটার ট্যাক্সি না চলায় তুলনামূলক বেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। হাতিরঝিলে আগে অনেক মাছ ছিল। লকডাউনে সবাই এখন ফ্রি থাকায় অনেকেই হাতিরঝিলের এই অংশ মাছ ধরতে আসেন। এ জন্যই মাছ শিকারির সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে।

তাদের সঙ্গে আলাপকালেই একজনের হুইলে প্রায় তিন কেজি ওজনের একটি পাঙাস মাছ ধরা পড়েছে বলে শোরগোল শুরু হলো। এগিয়ে যেতেই দেখা গেল, ধীরে ধীরে মাছটি টেনে তুললেন।

গুদারাঘাটে দাঁড়িয়ে মাছ ধরা দেখছিলেন মাসুদ হোসেন নামের একজন। তিনি বলেন, আমার ধারণাই ছিল না হাতিরঝিলে এভাবে মাছ ধরা যায়। হাতিরঝিল থেকে মাছ ধরতে আজই প্রথম দেখলাম। তাও আবার এত বড় মাছ। যারা মাছ ধরছেন তারা বলছেন, তারা নাকি প্রায়ই ৫/৭ কেজি ওজনের পাঙাস মাছ ধরেন।

এএসএস/ওএফ