সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

‌‘কুরআনে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা নেই’ বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য বলেছেন কুরআন শরীফে নাকি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা নেই। আমি বলব অবশ্যই আছে। কুরআন শরীফে আছে, লাকুম দিনুকুম ওয়া লিয়া দ্বীন অর্থাৎ যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে।’ 

শনিবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদের চলমান অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকায় সমালোচনা করেছিলেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ। কুরআনে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা নেই বলে দাবি করেছিলেন তিনি। একই সঙ্গে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা রাখা সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেছিলেন ওই সংসদ সদস্য।

এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের নবী করীম (সা.) বলেছেন অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল হতে। তিনি এই শিক্ষা দিয়েছেন। আমাদের কুরআন শরীফে বলা হয়েছে, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম সব ধর্মের মর্যাদা দেয়। কুরআন শরীফে আছে, লাকুম দিনুকুম ওয়া লিয়া দ্বীন অর্থাৎ যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। যার যার মতামত সে প্রকাশ করবে। এটা প্রকৃতপক্ষে ধর্ম নিরপেক্ষতাই আসে।’

তিনি বলেন, ‘যতই তিনি (হারুনুর রশিদ) অস্বীকার করুন, যেভাবে তিনি ব্যাখ্যা দেন। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। যুগ যুগ ধরে এটা চলছে। হ্যাঁ অবশ্যই নিজের ধর্ম পালনে সব সময় গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল থাকতে হবে। এটা আমাদের শিক্ষা। এটা নবী করিম (সা.) সব সময় বলে গেছেন। কাজেই এ ধরনের কথা সংসদে না বলাই ভালো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এমন একটি দল, যে দল সৃষ্টি করেছেন একজন সামরিক জান্তা। তিনি সেনাপ্রধান কখন হয়েছেন? ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার যে পরিকল্পনা হয়, তার মূল শক্তি ছিল এই জিয়াউর রহমান।’

তিনি বলেন, ‘খুনি কর্নেল রশিদ ও ফারুকের বিবিসিকে দেওয়া ইন্টারভিউতে এটি স্পষ্ট রয়েছে। জিয়াউর রহমান তাদের সঙ্গে না থাকলে কোনো দিনও এ ষড়যন্ত্র করতে পারত না। কারণ জিয়াউর রহমান ছিলেন উপ-সেনাপ্রধান।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে আবার রাজনীতিবিদ হন। উর্দি পড়ে ক্ষমতায় এসে রাজনীতিতে নাম লেখান। সেখান থেকে পরে রাজনৈতিক দল গঠন করেন। সেই দলই হলো বিএনপি।’

দেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারব্যবস্থায় যত উন্নয়ন হয়েছে, তার সবটাই হয়েছে আওয়ামী লীগের সময়। বিএনপির আমলে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়েও বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের সময় এক ছাত্রদল নেতার ঘাড়ে হাত রেখে আলোচনা করে বিচারপতির রায় দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ভোট চুরির সুযোগ তৈরির জন্য প্রধান বিচারপতির মেয়াদ বাড়িয়ে তাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার বিষয়টিও করেছিল বিএনপি।’

এইউএ/ওএফ