এক মাসে চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত বেড়েছে ১৯৭৯
চট্টগ্রামে জুন মাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। জুনে চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ২৫৯ জন। আর এই এক মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৯ জন। আগের মাসে অর্থাৎ মে মাসে চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন হাজার ২৮০ জন। আর করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ৯৪ জনের। সে হিসেবে মে মাসের তুলনায় জুন মাসে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৯৭৯ জন। যদিও মৃত্যুর সংখা কমেছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মে মাসের তুলনায় চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। জুন মাসের শুরুর দিকে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কম থাকলেও শেষ দিকে এসে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। আশা করছি, মানুষ লকডাউন মেনে চললে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, জুন মাসে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ২৫৯ জন। যার মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর তিন হাজার ২৬১ জন৷ আর বিভিন্ন উপজেলার এক হাজার ৯৫৮ জন।
চট্টগ্রামে জুন মাসে ২৮ হাজার ৮১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয় ৫ হাজার ২৫৯ জনের। শনাক্ত হার ১৮.২ শতাংশ। অপরদিকে করোনার শুরু থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৭৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৯ হাজার ৩১৬ জনের। শনাক্তের হার ১১.৯২ শতাংশ।
চট্টগ্রামে জুন মাসের শেষ পাঁচ দিনে শনাক্তের হার ছিল সবচেয়ে বেশি। বুধবার (৩০ জুন) চট্টগ্রামে করোনা শনাক্তের হার ছিল ২৯.২৫ শতাংশ। মঙ্গলবার (২৯ জুন) শনাক্তের হার ছিল ২৪.৪৩ শতাংশ। সোমবার (২৮ জুন) শনাক্তের হার ছিল ২৮.৪১ শতাংশ। রোববার (২৭ জুন) শনাক্তের হার ছিল ২২.০৫ শতাংশ। শনিবার (২৬ জুন) শনাক্তের হার ছিল ২০.৮২ শতাংশ। এই পাঁচ দিনে করোনা শনাক্তের হার ছিল ২০ থেকে ২৯ শতাংশের মধ্যে।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও ফিল্ড হাসপাতালের উদ্যোক্তা ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউনের আগে প্রায় স্বাভাবিক জীবনযাপন করেছে মানুষ। যার ফলাফল জুন মাসের শেষ পর্যায়ে এসে করোনা শনাক্তের হার বৃদ্ধি পাওয়া। এছাড়া মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা ছিল।
তিনি আরও বলেন, করোনা আক্রান্ত হয়ে যারা মারা যাচ্ছেন, তাদের নিজেদের অবহেলা আছে। শেষ সময়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয় মানুষ। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যে লকডাউন দেওয়া হয়েছে, তা কার্যকরভাবে পালন করতে হবে। এই লকডাউনের সুফল পাওয়া যাবে সাত দিন পরে। এ সময়ে সবাইকে সরকারের নির্দেশ মেনে চলতে হবে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, ৩০ জুন পর্যন্ত চট্টগ্রামে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ২৪৫ জন আর বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৩৬৫ জন। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে আইসিইউ বেড আছে ১৫০টি। এর মধ্যে রোগী ভর্তি আছে ৭৭টিতে।
কেএম/এসএসএইচ/জেএস