১ জুলাই থেকে অকারণে ঘর থেকে বের হলে তাকে গ্রেফতার করে মামলা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। 

বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, অকারণে কেউ যদি ঘর থেকে বের হয় তাকে গ্রেফতার করা হবে। দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারায় মামলা দিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হবে। আবার আদালতে না পাঠিয়ে মোবাইল কোর্ট দিয়ে তাদের তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থাও করা হতে পারে।

২৬৯ ধারায় সর্বোচ্চ ৬ মাসের জেল, অর্থদণ্ড ও উভয়দণ্ড হতে পারে বলে জানান কমিশনার। 

করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত মানুষের সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বুধবার।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, কেউ অকারণে বের হলে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব, প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ব্যবস্থা নেব। অকারণে বের হলেই আইনি ঝামেলায় পড়তে হবে। যানবাহন ব্যবহার করলে মোটরযান আইনে ব্যবস্থা নেব।
 
তিনি বলেন, দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারা অনুযায়ী কেউ বাইরে বের হলে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব, তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হবে। যেটি আমরা এর আগে কখনো করিনি। এবার আমরা এই অবস্থান পর্যন্ত যাব। আপনারা এমনও শুনতে পারেন ডিএমপি প্রথম দিন ৫ হাজার লোককে গ্রেফতার করেছে। এবার আমরা অত্যন্ত শক্ত অবস্থায় থাকব। 

নাগরিকদের উদ্দেশ্যে কমিশনার বলেন, পুলিশ আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে যতটা কঠোর হবে, আপনার পরিবার-সন্তান ততটাই নিরাপদে থাকবে। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন, পুলিশের সাথে তর্কে-বিতর্কে জড়িয়ে আমাদের ফাঁকি দিতে পারবেন, পুলিশের কাজের ভিডিও করে ভাইরাল করে পুলিশকে সমালোচনার মুখে ফেলতে পারবেন তবে সন্তান ও পরিবারকে সংক্রমণ থেকে দূরে রাখতে পারবেন না।

তিনি বলেন, সড়কে কোনো ধরনের যান্ত্রিক বাহন আমরা চলতে দেবো না। তবে সঙ্গত কারণ থাকলে বা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য বাজারে যেতে হলে আমরা তাদের রিকশা ব্যবহারের অনুরোধ করব। স্বাস্থ্য অধিদফতরে আমাদের একটি বৈঠক হয়েছিল সেখানে আইইডিসিআরের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রিকশা খোলা থাকে বিধায় সংক্রমণের সম্ভাবনা কম। তাই রিকশা ব্যবহার করা যাবে। তবে শুধুমাত্র জরুরি কাজে রিকশা ব্যবহার করা যাবে। কেউ যদি মনে করে, বউ বাচ্চা নিয়ে পার্কে ঘুরতে যাওয়ার জন্য রিকশা ব্যবহার করবে, সেটা হবে না।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকায় যেসব বাজার কাঁচাবাজার রয়েছে সেগুলোকে রাস্তার পাশে নিয়ে আসা হবে, যাতে মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাজার করতে পারেন। খাবারের হোটেলগুলো শুধুমাত্র খাবার বিক্রির জন্য খোলা থাকবে, কেউ বসে খেতে পারবে না। এছাড়া আমরা অলিগলির কোনো দোকান খোলা রাখতে দেবো না।

কমিশনার অনুরোধ জানান, সাংবাদিকসহ অনুমোদিত যারা বের হবেন তারা যেন মাস্ক পরেন এবং আইডি কার্ড নিয়ে বের হন।

আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীদের উদ্দেশ্যে কমিশনার বলেন, যারা বিদেশ থেকে ফিরবে তাদের বহনের জন্য গাড়ি ব্যবহার করা যাবে। তবে আগত যাত্রীদের পরিবারকে আমরা অনুরোধ করব, আপনারা গাড়ি দিয়ে বিমানবন্দরে না গেলেও চলবে। কারণ বিমানবন্দরে পার্কিংয়ে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক গাড়ি রয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীদের রাস্তায় পুলিশকে প্লেনের টিকিট এবং পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে।

কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ির চলাচলের বিষয়ে কমিশনার বলেন, যেহেতু কুরিয়ার সার্ভিস কাভার্ডভ্যান ব্যবহার করে এবং যাত্রী পরিবহন করে না, সে ক্ষেত্রে তারা চলাচল করতে পারবে। 

ক্লাব ও বারের বিষয়ে কমিশনার বলেন, ঢাকা ক্লাব হোক আর অফিসার্স ক্লাব হোক, সব বন্ধ থাকবে। ঢাকার কোনো ক্লাব খোলা থাকবে না। 

ডায়াবেটিসের অনেক রোগী আছেন যারা প্রতিদিন পার্কে হাঁটতে যান, তারা কী করবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডায়াবেটিসের রোগীরা এমনিতেই সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন, তাই আমি অনুরোধ করব তারা যেন বাসার আশপাশের জায়গায় হাঁটাচলা করেন। 

এআর/এনএফ/জেএস