কিশোর অপরাধ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে : র্যাব ডিজি
বর্তমানে দেশে কিশোর অপরাধ উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। মঙ্গলবার (২৯ জুন) দুপুরে র্যাব সদরদফতরে সাম্প্রতিক সময়ের দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
কিশোর গ্যাং প্রসঙ্গে র্যাব ডিজি বলেন, কিশোর অপরাধ উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা হত্যাকাণ্ডের মতো হিংস্র ও নৃশংস অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে। পরবর্তীতে প্রজন্মকে রক্ষা করতে এখনই ‘কিশোর গ্যাং’ কালচারের লাগাম টেনে ধরা দরকার। র্যাব ‘কিশোর গ্যাং’ নামক অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান পরিচালনা করেছে। আমরা প্রত্যাশা করি, পরিবার তার সন্তানের প্রতি আরও নজর দেবে; পাশাপাশি সমাজ ও শিক্ষাঙ্গনকে এগিয়ে আসতে হবে। যারা কিশোরদের গ্যাংয়ে রূপান্তর করছে অর্থাৎ ‘পৃষ্ঠপোষক’, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
বিজ্ঞাপন
এ সময় তিনি ভেজাল পণ্য, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত চলছে জানিয়ে বলেন, করোনা অতিমারির এ সময়ে ‘লকডাউন’ নিশ্চিত করার পাশাপাশি র্যাব ভেজাল পণ্য, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। এছাড়া গত একবছরের বেশি সময় ধরে আমরা মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, অবৈধ কিট, ভুয়া রিপোর্ট ইত্যাদি সম্পর্কীয় অভিযান পরিচালনা করছি। সাম্প্রতিক সময়ে করোনাসহ বিভিন্ন রোগের টেস্টিং কিট ও রি-এজেন্ট জব্দ ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ৯ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করে র্যাব। এভাবে র্যাব করোনাকালে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা এবং লকডাউন নিশ্চিত ও মানসম্মত করোনা সুরক্ষা সামগ্রী প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি কর্মহীন, অসহায় ও দুঃস্থদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া, সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অসুস্থ রোগীদের জরুরি সেবা দেওয়া ও অন্যান্য মানবিক কার্যক্রমের মাধ্যমে র্যাব মানুষের আস্থা ও অফুরন্ত ভালোবাসা অর্জন করেছে।
র্যাবের ৪৭ পুলিশ সুপারের পোস্টিংয়ের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
ডিএমটির মতো মাদক বাংলাদেশের গবেষণাগারে তৈরি হচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা ও সাইবার পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে কিন্তু এসব মাদকের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছি। বিষয়টি আমরা নজরদারিতে রেখেছি। গবেষণা করার জন্য যেন তৈরি না হয়, সেজন্য আমাদের তৎপরতা থাকবে।
অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটছে। এক্ষেত্রে র্যাবের বিশেষ কোনো সমস্যা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে অপরাধ কর্মকাণ্ড যেন না করতে পারে, সেজন্য কিন্তু অভ্যন্তরীণভাবে আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছি। সাইবার পেট্রোলিংয়ের জন্য আমাদের যে সক্ষমতা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন তা আমরা বৃদ্ধি করে চলছি। তাদের কার্যক্রমের ওপর আমাদের নজরদারি কিন্তু অব্যাহত রয়েছে। আগামীতে নিত্য নতুন কোনো প্রযুক্তি এলে সেটির সঙ্গে আমরা তাল মিলিয়ে কাজ করব।
সাগর-রুনি হত্যা মামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে র্যাব ডিজি বলেন, আপনারা জানেন মামলাটি আমাদের কাছে তদন্তাধীন রয়েছে। যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটি আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষ হলে আমরা আদালতে প্রতিবেদন পেশ করব।
মামলাটির তদন্ত করতে এত সময় লাগছে, এ ধরনের মামলার ক্ষেত্রে কী র্যাবে সক্ষমতা কম? এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাবের ডিজি বলেন, র্যাবের সক্ষমতা কম এ কথা আমি বলব না। সব মামলার ক্ষেত্রে যে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ডিটেক্ট করতে পেরেছি, এটা কিন্তু না। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত করে যাচ্ছি। এর চেয়ে বেশি সময় ধরেও অনেক মামলা বিভিন্ন সংস্থার কাছে তদন্তাধীন রয়েছে।
এমএসি/এসএসএইচ